জাবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০শতাংশ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত বলে জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘মাথাপিছু কিলোক্যালরি গ্রহণের মাত্রা ও দারিদ্রতা নিরুপন’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনারের বক্তারা। রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অর্থশাস্ত্র পাঠচক্র’র আয়োজনে অর্থনীতি বিভাগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৫ জন শিক্ষার্থীর খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টি গ্রহণের এক জরিপের তথ্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক রায়হান। জরিপে তিনি দেখান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ন্যূনতম প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি গ্রহণ করছে। বাকি ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে ন্যুনতম প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন দেশবরেণ্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শিক্ষার্থীদের খাদ্য ও পুষ্টির বিষয়ে সরকারকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার যে মানের খাদ্য সরবরাহ করে তার গুণগত মান নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের জন্য সুলভ মূল্যে পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাদ্য সরবরাহ জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থী গড়ে ১৮২১ কিলোক্যালরি পুষ্টি গ্রহণ করছে বলে তিনি ওই জরিপে উল্লেখ করেন। যা এক জন মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ২৮০০ কিলোক্যালরি অপেক্ষা অনেক কম।
এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট’ এর এক জরিপে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গড় পুষ্টি গ্রহণের পরিমাণ ১৫০০ কিলোক্যালরি দেখিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সেমিনারে তিনি জানান, ‘মৌলিক চাহিদা পূরণ ব্যয়’ পদ্ধতিতে দারিদ্ররেখা নিরুপণ পদ্ধতিতে ৮০শতাংশ এই সীমার নিচে রয়েছে বলে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়কে যেকোন উপায় শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত খাদ্য সহজলভ্য করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক ১২৫ টাকা হারে প্রদেয় সম্পূরক বৃত্তির পরিমাণ বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়।
সেমিনারে অর্থনীতি বিভাগরে অধ্যাপক খন্দকার মো. আশরাফুল মুনিম, অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আসরারুল ইসলাম চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি, সহকারী অধ্যাপক নাহিদ সুলতানা এবং বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।