আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও চীনা শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যহত রয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান সূচক সাংহাই কম্পোজিটে ৬.৪ শতাংশ নিম্নমুখিতা নিয়ে শেয়ারবাজারের দিন শুরু। অর্ধেক দিনশেষেই তা নেমে আসে ৪ শতাংশে।
সোমবার দেশটির পুঁজিবাজারে ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ ৮.৫ শতাংশ পতন হয়, যাকে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নাম দিয়েছে ‘ব্ল্যাক মানডে’। ওই দরপতন বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে ধস নামিয়ে দেয়। এক রাতের মধ্যেই ইউরোপ, এশিয়া এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও শেয়ারের দাম পড়ে যায়। এখনও চলছে এই দরপতন।
চীনের শেয়ারবাজারে দরপতনের কারণ
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে তুলনামূলক ধীর এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক বাজারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই ভয়ে অন্যান্য দেশগুলোর শেয়ারবাজারেও অগ্রগতি বিঘ্নিত হচ্ছে।
গত জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সাংহাই কম্পোজিট একটানা বাড়তে বাড়তে ১ বছরের মধ্যে দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছিলো। দিন দিন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকায় লাভের আশায় আরো অনেকে ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনতে থাকে। ফলে সূচক বাড়তে থাকে আরো দ্রুত গতিতে।
কিন্তু পরবর্তীতে দাম কমতে থাকলে লোকসানের ভয়ে অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে ঋণ শোধ করতে থাকে। ফলে হুট করেই অনেকটা নেমে যায় পুঁজিবাজারের সূচক।
অনেক সময় বিশেষ দিন বা উপলক্ষে পুঁজিবাজারের সূচক কমে যায়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নিলে ভবিষ্যৎ লোকসান ঠেকানো যায়। কিন্তু চীন সরকার এসব পরিস্থিতিতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দরপতন পরিস্থিতি আরো গুরুতর হয়ে ওঠে।
বিশ্ববাজারে দরপতনের কারণ
চীনে বিদেশি কোম্পানির কেনা শেয়ারের পরিমাণ খুব বেশি নয়, মাত্র ২ শতাংশ। দেশটির শেয়ারবাজারের দরপতনের কিছু প্রভাব বিশ্ববাজারে পড়লেও তা এতো বড় ধস নামানোর জন্য যথেষ্ট ছিলো না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় চীনের মুদ্রার দাম কমে যাওয়া।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই চীনের ব্যবসা রয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির এক বিরাট শক্তি এখন চীন। তাই চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শিথিল হতে শুরু করায় দেশটির মুদ্রার দাম কমে যায়। এতে দুর্বল হয়ে আসে পুঁজিবাজার। পাশাপাশি অন্যান্য দেশেও চীনের আমদানি-রপ্তানী ব্যাহত হতে থাকে। সব মিলিয়ে ধস নামে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে। যার প্রভাব পড়েছে জ্বালানী তেলের বাজারেও।