কয়েকদিন আগেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন। তারপরই তাকে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু মাহেলা জয়বর্ধনে সেই প্রস্তাব সযত্নে প্রত্যাখ্যান করেছেন। দেশের ক্রিকেটের যা পরিস্থিতি, তাতে তিনি কোনোভাবেই যুক্ত হতে চান না।
জয়াবর্ধনে বলছেন, ‘আমাকে দলে সঙ্গে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু, আমার আরও অনেক কাজ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলে কী ধরনের কাজ করব, তা ঠিক বুঝতে পারিনি।’
সঙ্গে মাস্টারক্লাস এই সাবেক ব্যাটসম্যানের সংযোজন, ‘ট্যাকটিক্যালি আমার এই দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা নয়। কারণ, যেভাবে দেশের ক্রিকেট চলে বা যেভাবে দল নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে আমার কোনো ভূমিকা নেই। দল নির্বাচন করা হয়ে গেছে। সবই কারও না কারও পরিকল্পনা মতো হচ্ছে। সেখানে আমার যুক্ত হওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।’
একটু থেমে তার বক্তব্য, ‘যেকোনো দলের ম্যানেজমেন্টে যুক্ত থাকতে পারলে আমার ভালো লাগে, কিন্তু শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে নয়। যেটা ঠিক জায়গা নয়, সেখানে কোনো দলের সঙ্গে কাজ করতে চাই না আমি।’
আগে ঘরোয়া ক্রিকেটকে ঢেলে সাজতে জয়বর্ধনে একটি পরিকল্পনা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডকে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, তা কোনো কাজে আসেনি।
গত বছর জয়বর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা এবং অরবিন্দ ডি সিলভার একটি কমিটি সেদেশের ক্রিকেট বোর্ডকে একটি রিপোর্ট দিয়েছিল। সেই রিপোর্টকে পাত্তাই দেয়া হয়নি। এসব ঘটনায় চটেছেন জয়বর্ধনে। বলছেন, ‘আমরা আট মাসের চেষ্টায় পেশাদার ক্রিকেট পরিকাঠামো তৈরি করি। আমরা নিজেরাই এর দেখভাল করার কথা বলি। কিন্তু তারা তা শোনেনি। আমরা চাইনি আমাদের দেশের প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের লিগে খেলুন। আমরা চেয়েছিলাম, যাতে তারা আমাদের লিগেই থাকেন। এর জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মানোন্নয়নের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।’
ক্ষুব্ধ মাহেলার আরও মন্তব্য, ‘প্রথমশ্রেণির ক্রিকেটে এমনকিছু দল রয়েছে, যে দলের ক্রিকেটারদের গড় বয়স ২৫। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা যখন খেলেছি, তখন অনেক সিনিয়র ক্রিকেটাররা আমাদের গাইড করতেন। তাদের ছাড়া আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটের মানোন্নয়ন করতে পারতাম না। আর সেটা না করে বড় বড় স্টেডিয়াম তৈরি করার কোনো অর্থ হয় না।’
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ এবং দীনেশ চান্দিমালের নেতৃত্বকেও একহাত নিয়েছেন জয়বর্ধনে। তার কথায়, ‘আমি এবং কুমার একমাত্র যে পরামর্শ অ্যাঞ্জেলোকে দিয়েছিলাম, তা হল এই, রাজনীতির কাছে সে যেন নতিস্বীকার না করে। তাকে শক্ত ধাঁচের নেতা হতে হবে। ক্রিকেটে রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটলে দলে তার প্রভাব পড়ে। আমরা তাকে বারবার এই বিষয়টা নিয়ে সচেতন করেছিলাম। সেটা সে মেনে চললে আজকের এই অবস্থা হত না। বিশ্বকাপে দলের নেতৃত্বে তারই থাকার কথা ছিল। সে কিন্তু এর ফল ভুগবে। কিন্তু, তার জন্য সেই দায়ী।’
চান্দিমালকে নিয়ে মাহেলার ভাষ্য, ‘আমার মনে হয় চান্দিমাল আরও একজন ক্রিকেটার যে ক্রিকেট রাজনীতির শিকার। ম্যাথুজের মতো সেও মাঠের বাইরের অনেকের আঙুলিহেলন মেনে নিয়েছে। দল নিয়ন্ত্রণ তারাই করছে। কড়া ধাঁচের নেতা থাকলে এটা হত না।’