সৌদি আরবের মক্কার মসজিদ আল হারামে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন আলী আহমেদ আল-মুল্লা। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী সবচেয়ে পবিত্র স্থানের এই দায়িত্ব তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম লাভ করেন ১৯৭৫ সালে।
মুয়াজ্জিন আল-মুল্লার ডাক নাম ‘বিলাল’। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বিলাল (রা) এর নামানুসারেই তার এই নামকরণ।
হযরত বিলাল (রা) এর কন্ঠ অত্যন্ত সুরেলা এবং মিষ্টি হওয়ায় নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেছিলেন, “বিলালই হবে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন।”
বংশপরস্পরায় এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন মুয়াজ্জিন আল-মুল্লার পরিবার। এর আগে, তার দাদা শেখ আলী এবং বাবা সিদ্দিক এবং তার দুইজন চাচা এবং দুই চাচাতো ভাই এই দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুয়াজ্জিন আলী আহমেদ আল-মুল্লা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৫ সালে। তার চাচার পুত্র শেখ আব্দুলমালাক আল-মুল্লার মৃত্যুর পর ১৯৭৫ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ আল হারামের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মুয়াজ্জিন আলী জানান, তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সংবাদটি হলো- যখন তার বাবা তাকে জানান, তিনি মক্বার মসজিদ আল হারামের মুয়াজ্জিন হতে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, তার অনেক বন্ধুও তাকে এই দায়িত্ব গ্রহণে উৎসাহিত করেন।
মুয়াজ্জিন আলী বলেন, ১৯৭৯ সালে গ্র্যান্ড মসজিদে নামাজ পরা ২৩ দিন বন্ধ রাখার সময়কার প্রত্যক্ষদর্শীও তিনি। সেসময় ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা এবং একে ঘিরে তৈরি মসজিদ আল হারাম অবরোধ করেছিল একটি সালাফিপন্থী গোষ্ঠী।
১৯৭৯ সালের ২০শে নভেম্বর অস্ত্রধারীদের দল নিয়ে জুহাইমান আল-ওতোয়বী মসজিদটি অবরোধ করেন। তিনি ইমাম মাহদীর আবির্ভাব ঘোষণা করেন। সেখানে উপস্থিত থাকা তার সম্পর্কিত ভাই মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল কাহতানিকেই ইমাম মাহদী বলে ঘোষণা করেন এবং তার প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, ইমাম মাহদী বিশ্বে আবির্ভূত হবেন ইসলামকে পুনরুদ্ধার করতে। কেয়ামতে আগে দাজ্জালের শাসনকে উৎখাত করে ইমাম মাহদী বিশ্বে ইসলামকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন। কেয়ামতের পূর্বে বিশ্ব ধ্বংস হওয়ার আগে ঘটবে এই ঘটনা।
পরে সৌদি বাহিনীর তৎপরতায় শত শত মানুষের মৃত্যু এবং প্রায় এক হাজার আহতের বিনিময়ে এই অবরোধের অবসান ঘটে।
মুয়াজ্জিন আলী জানান, এই অবরোধ অবসানের পর তিনিই প্রথম আজানটি দিয়েছিলেন। সৌদি কিং খালেদ বিন আব্দুল আজিজের উপস্থিতিতে তিনি মাগরীবের আজান দিয়েছিলেন।