ঘূর্ণিঝড় কোমেন এবং ভারি বর্ষণের প্রভাবে বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বান্দরবানে একমাসে তিন দফা বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বান্দরবানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ও পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাকখালীর নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা শহরসহ ৬ উপজেলায় বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। প্রধান সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ২ দিন ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে নিত্যপণ্যের দাম।
ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন জানান, তারা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেও সারতে পারেননি, আবার তাদের বন্যা কবলিত হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে হয়েছে। খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ আর জ্বালানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রীর অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বানভাসি লোকজন। বিশুদ্ধ পানির উৎসগুলো বন্যায় ডুবে যাওয়ায় খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ সংক্রমিত হচ্ছে। ভারি বৃষ্টিপাতে বীজতলা ডুবে গেছে। সড়ক ডুবে যাওয়ায় সারাদেশের সাথে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, অতি বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামায় সাঙ্গু নদীর কূল ছাপিয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গাছপালা, ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে রূপ নিলেও এর প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। ভারি বর্ষণে কক্সবাজারে তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। চকরিয়া, পেকুয়া ও রামুর অনেক এলাকাই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। বেড়েছে দুর্ভোগ। ত্রাণ ও পর্যাপ্ত নয়। বন্যায় স্কুল-কলেজে যেতে পারছেন না বলে জানান এক শিক্ষার্থী। সরকারি সহযোগিতার অভাবে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে বলে জানান আরেক ব্যক্তি।
বন্যার নানা বিষয় জানাতে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে গণমাধ্যমের সহযোগীতা চেয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক।
ভবিষ্যতে বন্যা নিয়নন্ত্রণে মাতারবাড়িতে বাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। মাতারবাড়ি ধলঘাটা নাগরিক কল্যাণ ফোরামের সভাপতি এম রইচ উদ্দিন জানান, এই বেড়িবাঁধ থাকলে এমন বন্যা পরিস্থিতি হয়তো হতো না।
পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উঁচু জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন এলাকা সহ জেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম ও চর। আউশ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডুবে গেছে আমনের বীজতলা। সাগর উত্তাল থাকায় ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারছেন জেলেরা।