পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে এক সপ্তাহেরও কম সময় বাকি। এমন সময় দেশটির অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রধানের বিবিসি’কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক।
ডন মিডিয়া গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদ হারুন ওই সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন, দেশটির সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনী সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান রাজনীতিক ইমরান খান এবং তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) পক্ষে কাজ করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
বিবিসির ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে দেয়া এই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর অনেক মহল থেকেই দাবি করা হচ্ছে, হারুন ও তার পত্রিকা ডন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পক্ষে এবং ইমরান খানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
পাকিস্তানে ২৫ জুলাই জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এর আগে যেসব পত্রিকা সেন্সরশিপের এবং হুমকির মধ্যে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ডন।
সোমবার প্রচারিত হওয়া ওই সাক্ষাৎকারে হারুন বলেন, দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনী সংবাদমাধ্যমের জন্য একটি ‘অভূতপূর্ব আক্রমণ’। আর ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকেই এই আক্রমণের শিকার হচ্ছে ডন।
বিবিসি জানায়, ১৯৪৭ সালের পর থেকেই দেশটির রাজনীতিতে অহরহ হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। দেশটিতে দফায় দফায় সামরিক এবং বেসামরিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে।
যদিও সেনাবাহিনী আগামী নির্বাচনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অল পাকিস্তান নিউজপেপারস সোসাইটির সভাপতি হামিদ হারুন বলেন, ‘আমি মনে করি, এই পর্যায়ে দ্বিতীয় সারির নেতাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটা জোড়াতালি দেয়া জোট সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে বলে দেখা যাচ্ছে যেটা ‘ডিপ স্টেট’-এর পরিচালনায় চলবে।’
এই নেতা বলতে ইমরান খান ও তার দলকে বোঝাচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, কিছু কিছু সময় ইমরানের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের সম্পর্কের পাল্লা ভারী হয়, আবার কখনো তার দলের অন্য লোকজনের নাম উঠে আসে।
নিজের বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ দেখানোর জন্য চাপ দিলে ডন প্রধান বলেন, পাকিস্তানের মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক বোদ্ধাদের বর্তমান কর্মকাণ্ড থেকে সহজেই বিষয়টি অনুমান করে নেয়া যায়।
এই সাক্ষাৎকার নিয়ে পাকিস্তান জুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এক টুইটবার্তায় ইমরান খান বলেছেন, তার দলের বিরুদ্ধে ডন পত্রিকা ভয়ানক বিরুদ্ধচারণ করেছে। অন্যরা বলছেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার আগে হারুনের কাছে শক্ত তথ্য-প্রমাণ থাকা উচিত ছিল।
তবে হারুনের পক্ষে কিছু সাংবাদিক এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীরা কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য, হামিদ হারুনকে একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছিল।