টি-টুয়েন্টি খুব শর্ট ভার্সন হলেও হাই ইনটেন্সড গেম মনে করছেন বরিশাল বুলসের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আর এবারের বিপিএলের আসর দিয়ে টাইগার টেস্ট দলের অধিনায়ক নিজের সেরা ফর্মে ফিরে আসতে আশাবাদী ।
শুক্রবার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটের একাডেমীর মাঠে অনুশীলন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
টি-টুয়েন্টিকে হাই ইনটেন্সড গেম উল্লেখ করে মুশফিক বলেন: একটা বোলার টেস্টে ১৫/২০ বা ৩০ ওভার পায়, ওয়ানডেতে ১০ ওভার কিন্তু এখানে পায় মাত্র ৪ ওভার। আমি মনে করি ২/৩ ওভার না, একটা বলেই খেলা বদলে যেতে পারে। দেখা যায় কোন উইকেট না হারিয়ে ৫০ রান। একটা বলে একটা উইকেট পড়লে নতুন ব্যাটসম্যান এসে কি করবে তা পানি বলতে পারেন না। প্রতিটা বলই গুরুত্বপূর্ণ, আর আমরা সেভাবেই ফোকাস করার চেষ্টা করছি। এটা খুব শর্ট ভার্সন কিন্তু হাই ইনটেন্সড গেম। আমরা সেভাবেই চেষ্টা করছি যেন শারীরিকভাবে সবাই ফিট থাকে এবং মানসিকভাবে শক্ত থাকে। তো এই দুইটা মিলিয়ে চেষ্টা করছি সঠিক কম্বিনেশন করার। আশা করি মোমেন্টামটা যারা প্রথমে আর্লি আর্লি নিতে পারবে তারাই জয়ী হবে।
নিজের দল সম্পর্কে মুশফিক বলেন: সত্যি বলতে কি আমাদের দলটা হয়তো কাগজে কলমে অত শক্তিশালী না। এমন কোন সুপার স্টারও নাই। কিন্তু কার্যকরী কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেক ভাইটাল হয়ে উঠতে পারে।
দলের খেলোয়াড়দের বিষয়ে মুশফিক জানান: আল-আমিন অন্যতম সফল বোলার জাতীয় দলে এবং টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। রনি গত আসরের সর্বাধিক উইকেট শিকারি ছিল। রাব্বি অনেক ভালো তরুণ তারকা। আরও কিছু ব্যাটসম্যান আছে। স্পিনার হিসেবে তাইজুল আছে, মনির আছে, মেহেদী আছে। আমি দল নিয়ে অনেক খুশি। আমাদের যে ক্ষমতা, আমাদের যে নাম সেটার সুবিচার করতে পারলে ইনশাআল্লাহ ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।
নিজের টিমকে ‘ওয়েল ব্যাল্যান্সড’ অাখ্যা দিয়ে মুশফিক বলেন: তিন দেশী স্পিনারের সঙ্গে বিদেশি দিলশান মুনাবিরা আছে। টি-টয়েন্টি ক্রিকেট অনেকে বলেন পেস বোলারদের গেম, কিন্তু রেকর্ড ঘেঁটে দেখলে দেখা যায়, স্পিনারদের কিন্তু ইকোনমি অনেক কম এবং তারাই কিন্তু ভাইটাল হয়ে যায়। তাই আবারও বলছি খেলোয়াড়রা তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে আমাদের পক্ষেই ফলাফল আসবে।
বিপিএলের চার আসরে মুশফিকের চতুর্থ দল বরিশাল। এর আগে দুরন্ত রাজশাহী, সিলেট রয়্যালস ও সিলেট সুপারস্টার্সের হয়ে খেলেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
প্রথম আসরে রাজশাহীর হয়ে ৯ ইনিংসে ৩৯ গড়ে ২৩৪ রান করেন মুশফিক। সিলেট রয়্যালসের হয়ে পরের আসরে ১৩ ইনিংসে ৪০ গড়ে করেন ৪৪০ রান। টি২০ ক্যারিয়ার সেরা ৮৬ রানের ইনিংসটি খেলেন তখনই।
গত আসরে সিলেট সুপারস্টার্সের হয়ে চেনা ছন্দে দেখা যায়নি মুশফিককে। ৯ ইনিংসে ২৬.১৬ গড়ে করেন ১৫৭ রান। জাতীয় দলের হয়েও শেষ দিকে রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয় তাকে। টি-টোয়েন্টিতে শেষ ৯ ইনিংসের পাঁচটিতেই ফিরেন এক অঙ্কের ঘরে।
মুশফিক বলেন: মানুষের আপ অ্যান্ড ডাউন থাকতেই পারে। আর টি-টোয়েন্টি সংস্করণ মোটেও সহজ নয়। এতো শর্ট ভার্সন যে, অনেক সময় দেখা যায় সময় নেওয়ার সুযোগ থাকে না। মারতে গিয়ে বা দলের কারণে খেলতে গিয়ে আউট হতে হয়। সেদিক থেকে বলবো, আমি অনেক অখুশি ছিলাম আমার পারফরম্যান্সে.. তারপরও আমি মানুষ। আমি অনেক পরিশ্রম করছি, চেষ্টা করছি এই বিপিএলে আমার আগের ফর্মে ফিরে আসতে। দল যে কারণে আমাকে নিয়েছে, সেটার প্রতিদানও যেন দিতে পারি।
মুশফিক বলেন: টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য পাওয়া অনেক কঠিন। অধিকাংশ খেলোয়াড়রাতো আর ওই রকম পাওয়ার হিটার হয়না ক্রিস গেইলের মত। তাই আপনার শক্তিমত্তা অনুযায়ী কিছু রাখতে হবে। শনিবার আমাদের প্রথম ম্যাচ, আমরা ফোকাস রাখছি যেন জয় দিয়ে শুরু করা যায়।
শনিবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংসের মুখোমুখি হবে বরিশাল। জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে আত্মবিশ্বাসী দলটির অধিনায়ক।