চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘বিনীত অনুরোধ, আপনারা দয়া করে ঘরে থাকুন’

ঘরের ক্যাপ্টেন্সি ঠিকঠাক করতে বললেন মাশরাফী

করোনাভাইরাসের বিস্তার এড়াতে বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই প্রচারণা চালাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সোমবার দুদফা প্রচারণা চালালেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সকালে সতর্কতামূলক স্ট্যাটাস দেয়ার পর রাতে লাইভে এসে দেশসেরা ওয়ানডে অধিনায়ক সবাইকে ঘরে থাকার বিনীত অনুরোধ জানান।

সবাইকে সতর্ক করে মাশরাফী বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন, আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন কিন্তু আপনি নিজে। আপনি যদি আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন্সি ঠিকমতো করতে পারেন, আমি নিশ্চিত যে এর প্রকোপ কিছুটা হলেও কমাতে পারব। এছাড়া ডিজাস্টার হবার চান্স কিন্তু বেশি।’

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

‘করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই আতঙ্কিত। আতঙ্কিত না হবারও কোনো কারণ নাই। পৃথিবীর সব বড় বড় দেশগুলোও শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তারা কোনোভাবেই পেরে উঠতে পারছে না। এখন আমাদের কী করণীয় উচিৎ বা আমরা যত বড় বড় দেশগুলো দেখছি ভেঙে পড়ছে। আমাদের দেশ তো এমনিতেই ছোট, মানুষের সংখ্যা অনেকবেশি। আমাদের যদি এমন ক্রাইসিস আসে, আল্লাহ না করুক কী হতে পারে আমরা সবাই বুঝতে পারছি।’

‘তাই এই মুহূর্তে করণীয় অনেককিছু আছে যেগুলো আমি মনে অরি যে আমাদের সবারই করা উচিৎ। এক হচ্ছে, ঘরে বসে আল্লাহকে ডাকা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং আল্লাহকে বলা যে আমাদের উপর রহমত করুন। এই ধরনের দুর্যোগ থেকে আমাদের সহযোগিতা করুন। কারো যেন না হয়, সবাই যেন সুস্থ থাকি।’

‘দ্বিতীয়ত, করণীয় যেগুলো আছে আমাদের। সেটা হচ্ছে অবশ্যই অবশ্যই প্রবাসী ভাই ও বোনরা যারা বিদেশে থাকেন, আসছেন দেশে বা বেড়াতে গিয়েছিলেন সেখানে, আসছেন। এখানে আপনাদের অনেককিছু করার আছে। প্রথম হচ্ছে, অবশ্যই নিয়মকানুনগুলো মেনে চলা। কোয়ারেন্টাইন এই শব্দটা ব্যবহার না করে বলব গৃহবন্দী থাকা। এবং সেটা আপনার পরিবার নিয়ে না, আপনি আলাদা ১৪ দিন থাকা এবং ১৪ দিন পার হবার পর যদি আপনি অসুস্থ না হন, তখন আপনার পরিবারকে নিয়ে ঘরে থাকা।’

‘যতক্ষণ না কোনো ঘোষণা আসছে, ডাক্তাররা বা সমাজের উচ্চপদস্থরা ঘোষণা না করছে যে, উই আর সেইফ। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে ঘরে থাকা। এটা হচ্ছে ফার্স্ট থিংস।’

‘এরপরে আমাদের অবশ্যই করণীয় আছে যেটা হচ্ছে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিয়মিত, নিয়মিত ১৫-২০ মিনিট পরপর পানি পান করা এবং আপনার ঘর, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা। এসব ব্যাপার কিন্তু আছে। আমাদের কিন্তু এইসব নিয়ম-কানুনগুলো মেনে চলতে হবে। এর থেকে কঠিন অবস্থায় যাওয়ার পর কিন্তু মেনে চললে সুযোগ আমরা পাব না। তাই আমাদের উচিৎ, এখনই এই জিনিসটাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা।’

‘কারণ এটা একটা রাষ্ট্র ক্রাইসিস হয়ে যেতে পারে। এবং আমরা কেউই জানি না, আমাদের আশে পাশে কার আছে। আমরা বের হচ্ছি, আমরা কার হাত ধরছি। আমরা কী করছি, আমরা কেউই জানি না যে, এই ভাইরাসটা কে নিয়ে চলছে।’

‘কারণ, এই ভাইরাসটা ১৪ দিন সময় নেবে আপনি বোঝার জন্য। তাই আমার মনে হয় যে, এটা গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার। আমরা যে এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না এটা যদি আমাকে আপনাকে আমাদের পরিবারকে বা সামাজিকভাবে কাউকে আঘাত করে, তখন কিন্তু সামাল দেয়া খুব কঠিন হবে।’

‘আগেও বলেছি ইতালির মতো দেশ, বড় বড় দেশগুলো কিন্তু হিমশিম খাচ্ছে। সো এখানে আমরা কতটুকু পারবো সেটা ভাবার সময় এসেছে। কারণ দেশটা অনেক ছোট, মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই এখানে কিন্তু ভাবার সময় আছে।’

‘তো আমাদের যে করণীয় জিনিসগুলা আছে, আমরা করি। এটা করা খুবই প্রয়োজন। একটা কথা মনে রাখবেন যে, আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন কিন্তু আপনি নিজে। আপনি যদি আপনার ঘরের ক্যাপ্টেন্সি ঠিকমতো করতে পারেন, আমি নিশ্চিত যে এর প্রকোপ কিছুটা হলেও কমাতে পারব। এছাড়া ডিজাস্টার হবার চান্স কিন্তু বেশি।’

‘আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা দয়া করে ঘরে থাকুন। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকুন, আপনার পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন, আপনার সমাজকে সুরক্ষিত রাখুন। এটা আপনার আমার সবার দায়িত্ব। এই মুহূর্তে কোনোভাবেই এফোর্ট করতে পারি না বাইরে আসা। বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়া। আমরা অনেক সময় বলি যে, আমরা সময় পাই না, কাজের ব্যস্ততা। একারণে পরিবারকে সময় দেয়া। তো আপনি এখন সময় দেন। এখন আপনার কাজের ব্যস্ততা নাই। আর সবাই দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করুন। যতটুক না করলেই না। তারপরও আমি বলব, ঘরে থাকুন, আপনার সমাজকে রক্ষা করুন। ভালো থাকুন সবাই।’