করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ যে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল, তা তুলে নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির পর দেশের কোথাও আর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। এর মানে হলো ২৩ তারিখ থেকে মানুষকে মাস্ক-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করতে হবে। বিশেষ করে ঘরের বাইরে।
আজ রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি ঘরের বাইরে গেলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরার বিষয়ে সচেতন করেন। সরকারের এমন ঘোষণায় আগামী বুধবার থেকে গণপরিবহন, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল সবকিছুই আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। সভা-সমাবেশ করা যাবে উন্মুক্ত স্থানেও।
আমরা জানি, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। তার আগে ২০২০ সালের পর কয়েক দফায় এমন বিধিনিষেধ কার্যকর ছিল। করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমায় সেই বিধিনিষেধও আস্তে আস্তে তুলে নেওয়া হয়। খুলে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
তবে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ ধরন ওমিক্রন বিশ্বজুড়ে নতুন আতঙ্ক তৈরি করে। বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তা। বাংলাদেশও তার বাইরে ছিল না। তবে করোনার এই ধরন ছিল অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী। এ কারণেই খুব একটু ক্ষতির মুখে মানুষকে ফেলতে পারেনি। বিশেষ করে করোনার ডেল্টা ধরন যেভাবে পুরো বিশ্বকে থামকে দিয়েছিল, সেই তুলনায় ওমিক্রন কিছুই করতে পারেনি।
ডেল্টা ধরনের সময় দেশে হাসপাতালগুলোতে শয্যা সঙ্কটের পাশাপাশি অক্সিজেন সরবরাহেও ঘাটতি দেখা দেয়। প্রতিবেশ দেশ ভারত নিজেদের সঙ্কটে করোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর দুটি অস্ত্র অক্সিজেন ও ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল। মানুষের সচেতনতা ও অগ্রহে শেষ পর্যন্ত ডেল্টা থেকে রক্ষা পাওয়া গেলেও হাজির হয় ওমিক্রন।
করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা তা হলো; স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলায় করোনার দাপট বারবার কমেছে বা নিয়ন্ত্রণে থেকেছে। কিন্তু যখনই তাকে হালকাভাবে নেওয়া হয়েছে, তখনই আবারও বেড়েছে করোনার উপস্থিতি।
আমরা মনে করি, এমন পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হলেও বিষয়টা হালকাভাবে নেওয়া উচিৎ নয়। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।