ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে চলছে ভোটগণনা। প্রাথমিক গণনায় কখনো ক্ষমতাসীন বিজেপি সামান্য এগিয়ে থাকছে, কখনো আবার এগোচ্ছে কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) জোট।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি পেয়েছে ২২টি আসন। কংগ্রেস ৯টি, জেএমএম ১৯টি ও আরজেডি ৩টি – মোট ৩১টি আসন পেয়েছে। ফলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, ঝাড়খণ্ড হয়তো এবার ছুটে যেতে পারে বিজেপির হাত থেকে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডে মোট ৮১টি আসনে এবার নির্বাচন হয়েছে। ৩০ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ ধাপে হয় ভোটগ্রহণ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে রাজ্য সরকার গঠন করার জন্য একটি দল বা জোটকে পেতে হবে কমপক্ষে ৪১টি আসন।
সর্বশেষ ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। কিন্তু বুথফেরত জরিপ বলছে, কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট বেশি আসন পাবে বিজেপির চেয়ে। এমনকি বর্তমান বিরোধী এই জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনাও এবার রয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোটে ছিল আজসু (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)। কিন্তু এবার তারা লড়েছে আলাদাভাবে। দলটির সভাপতি সুদেশ মাহাতো বলেছেন, ভোটের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা জোট এবং জোটসঙ্গীর কথা ভাববেন।
গত নির্বাচনে ৩৭টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। আজসু’র ৫টি আসন মিলে মোট ৪২টি আসন নিয়ে সেবার সরকার গঠন করেছিল এই জোট। কিন্তু ২০১৫ সালের শুরুতে ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা, জেভিএমের ছয় বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেয়ার ফলে বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যায় বিধানসভায়।
ঝাড়খণ্ডের ইতিহাসে সেবারই প্রথম বিধানসভায় একা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় কোনো দল, আর সেই প্রথম একজন ব্যক্তি (রঘুবর দাস) টানা পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে থেকে মেয়াদ শেষ করেন। রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বারবার রাজনৈতিক অচলাবস্থা, জোট ভাঙা-গড়াসহ নানা কারণে রঘুবরের আগে কোনো মুখ্যমন্ত্রীই ঝাড়খণ্ডে টানা আড়াই বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি।
এবারের নির্বাচনে সর্বশেষ তথ্যমতে, আজসু এ পর্যন্ত পেয়েছে ৬টি আসন। আর জেএমএম পেয়েছে ৪টি।
এর আগে, শিবসেনার সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ায় মহারাষ্ট্র হাতছাড়া হয়ে গেছে বিজেপির। সে তুলনায় ছোট রাজ্য হলেও ঝাড়খণ্ড হারালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।