প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে উৎপাদনের মতো বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থাকেও বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক ৩ দিনের জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন এককভাবে পরিচালনা করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নে সরকার শুধু একা যেতে পারে না। এজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও দরকার আছে। বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন ২০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাচ্ছে দেশ। তাই ট্রান্সমিশন লাইনও বেসরকারি খাতে যাওয়া উচিত। এতে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতের মান উন্নয়ন হবে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকার ২০১০ সালে মেগা প্রকল্প হাতে নেয়। যে কারণে এ খাতের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। জ্বালানি খাত উন্নত হলে তা পুরো মানব উন্নয়ন সূচককে উন্নত করবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
২০৪১ সালে প্রবৃদ্ধি ১০ ভাগ হবে উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০৪০ সাল নাগাদ সরকারের লক্ষ্য ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন। এটি হলে বিনিয়োগে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
এর আগে গত ২ দিনের এ সম্মেলনে সরকারের সংশ্লিষ্ট সবগুলো মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর উন্নয়ন পর্যালোচনা করা হয়। এসব পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে এসডিজি অর্জনের ১৭টি লক্ষ্যের ওপর নিজ নিজ দপ্তরের উন্নয়ন ফিরিস্তি, সমস্যা, সম্ভাবনা এবং প্রতিবন্ধকতার চিত্র তুলে ধরেন।
আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘের দেওয়া এ ১৭টি উন্নয়ন শর্ত পূরণের লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্টদের প্রতি।
২০০০ সালে ঘোষিত জাতিসংঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) সবগুলো সূচকেই কাঙ্খিত উন্নয়ন ঘটে বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে এটি শেষ হওয়ার পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জাতিসংঘ। এ লক্ষ্যমাত্রায় নির্দিষ্ট করে ১৭টি বিষয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি ঘটানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।