কাঁধের ইনজুরি থেকে সেরে উঠেছেন বেশিদিন হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে কতটা মেলে ধরতে পারবেন সেটি নিয়ে ছিল শঙ্কা। শঙ্কা-সন্দেহকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জ্যামাইকায় চমক দেখালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অভিষেক টেস্টে ৬ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়া এই অফস্পিনার প্রথমবার বিদেশের মাটিতে শিকার করলেন ৫ উইকেট।
স্যাবাইনা পার্কে প্রথম দিন ৩ উইকেট পাওয়া মিরাজ দ্বিতীয় দিন পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। মিরাজের ৫ উইকেট নেয়ার দিনে ৩৫৪ রানে থেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস।
ক্যারিয়ারে চতুর্থবার ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন মিরাজ। আগের তিনটি দেশের মাটিতে।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ডে ২৪ রান যোগ হতেই টাইগার বোলাররা তুলে নেন ৫ উইকেট। ৩১৯ রানে ৯ উইকেট হারানো ক্যারিবীয়রা সাড়ে তিনশ পেরোয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের মারমুখী ব্যাটিংয়ে।
এই ডানহাতি ৩৩ রানে অপরাজিত থাকলেও শেষ ব্যাটসম্যান শ্যানন গ্যাব্রিয়েল বোল্ড হলে থামে তাদের ইনিংস। আবু জায়েদ রাহির তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে এ ডানহাতি করেন যান ১২ রান।
দিনের প্রথম সাফল্য আসে আবু জায়েদ রাহির হাত ধরেই। এই পেসার শুরুতেই ফিরিয়ে দেন ৮৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা শিমরন হেটমায়ারকে। সাজঘরে ফেরেন আগের দিনের সঙ্গে কোনো রান যোগ না করেই। অফস্টাম্পের বাইরে লাফিয়ে ওঠা বলে ব্যাট ছোঁয়াতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন এ বাঁহাতি। রোস্টন চে্ইজকে (২০) এলবিডব্লিউ করে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান রাহি।
দ্রুত ২ উইকেট তুলে নিলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে স্পিনাররা। দুই প্রান্ত থেকে মিলতে থাকে টার্ন সঙ্গে বাড়তি বাউন্স। শেন ডউরিচকে (৬) শর্ট কাভারে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে প্রথম শিকার পান তাইজুল ইসলাম। পরে মিরাজের জোড়া শিকারে লেজ বেরিয়ে যায় ক্যারিবীয়দের। কেমো পল ও কামিন্স রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন সাজঘরে।
প্রথম দিন ৪ উইকেট হারিয়ে ২৯৫ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিনে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিক শিবির তুলতে পেরেছে ৫৯ রান।
দ্বিতীয় টেস্টেও বাংলাদেশের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে আউট হন ১১০ রান করে। তাইজুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে মিরাজের তৃতীয় শিকার হন এ ডানহাতি ওপেনার। ২৭৯ বলের ইনিংসটি সাজানো ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে।
স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৮ রানে। শুরু থেকেই মিরাজের অফস্পিনের মুখে ধুঁকেছে স্বাগতিক ওপেনাররা। বেশি ধুঁকতে থাকা ডেভন স্মিথ (২) মিরাজের বলে শর্ট লেগে মুমিনুল হকের হাতে ক্যাচ দেন। প্রথম ঘণ্টা পার হতেই কাইরন পাওয়েলকে (২৯) এলবিডব্লিউ করে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন মিরাজই।
তৃতীয় উইকেট পড়ে লাঞ্চ বিরতির পরের ঘণ্টায়। দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় তাইজুল ইসলামের বলে সোহানের ক্যাচে ফেরেন ২৯ রান করা শাই হোপ।