২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখেছে বলে দাবি করেছেন বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ। এর প্রেক্ষাপট হিসেবে ২০১২ সালের শেষ ও ২০১৩ সালের শুরুর দিকের অনুষ্ঠিত ছয়টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।
শেষ কার্যদিবসে, বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে তিনি একথা বলেন।
তিনি দাবি করেন: অনেক রাজনৈতিক দল ওই সময়ে নির্বাচনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ না করলেও; পরবর্তীতে আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে আমাদের কাজের এবং নিরপেক্ষতার প্রসংশা করেন। যদিও রাজনৈতিক কারণে মিডিয়ার কাছে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে হচ্ছে, বলে তার সেসময়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলে: যখন দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন পক্ষের চেষ্টা সত্বেও সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনা সম্ভব হলো না, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প আমাদের সামনে ছিলো না। তাই, যারা তখন নির্বাচনে এসেছেন-তাদের নিয়েই আমরা নির্বাচন করেছি।
তা না হলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো। নির্বাচনের আগের রাতে কি হয়েছিলো আপনারা জানেন। তারপরও নির্বাচনস কমিশন অসীম সাহসীকতার সঙ্গে সকলে ভোট গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের ৩ জন্য কর্মকর্তাকে হারিয়েছি ওই দিন।
তার অধিনে অনুষ্ঠিত শেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন কমিশেনের নিপেক্ষতার কথা তুলে ধরে বলেন,‘‘ এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হয়েছে। যা দেশে বিদেশে প্রসংশা কুড়িয়েছে।’’
এছাড়া তিনি গত পাঁচ বছরে নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। এর মধ্যে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ, স্মার্ট কার্ড তৈরি এবং উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন কমিশেনে কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া উল্লেখযোগ্য।
এর আগে, ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহ নেওয়াজকে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লু রহমান।
এর মধ্যে প্রথম চারজন ৯ ফেব্রুয়ারি ইসিতে যোগদান করলেও নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ ১৫ ফেব্রুয়ারি যোগ দেন। পাঁচ সদস্যর এই কমিশন নিজেদের মেয়াদে সাড়ে ৭ হাজারের অধিক নির্বাচন পরিচালনা করেছে।
এই কমিশনের অধীনে ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। পরের বছর অনুষ্ঠিত রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুর সিটির নির্বাচনে জয় পান বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা। সবকটি নির্বাচনই সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে কমিশন। এ নির্বাচনে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ নেয়নি। অবশ্য, এই কমিশনের অধীনে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভিডিও রিপোর্ট দেখতে নিচে ক্লিক করুন: