অবৈধ বোলিং অ্যাকশনে নিষিদ্ধ হওয়ার পর শুদ্ধ হয়ে ফিরেছিলেন। ফিরে চেনা ছন্দটা আর পাননি। পেছনে ফেলে আসা উড়ন্ত ফর্মের কারণে যার পরিচিতি, বিবর্ণ প্রদর্শনীতে সে তো জাতীয় দলে জায়গা হারাবেই। সাঈদ আজমলও সেটা হারিয়েছেন। আস্তে আস্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আঙ্গিনা থেকেই মুছে গেল তার নাম। পাকিস্তানি স্পিনার এখন সাবেক।
অনেকটা আড়ালে থাকা অবস্থাতেই ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন আজমল। শেষবেলায় মিশে থাকল মনোবিষাদ। কণ্ঠে থাকল বোর্ডের প্রতি শ্লেষ।
ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন আজমল। অ্যাকশন শুধরে এক বছর বাদে ফিরেছিলেন। আগের মত সাফল্যটাই কেবল পাননি। সেইসব দুঃসময়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) পাশে পাননি বলে জানালেন সদ্য সাবেক হওয়া অফব্রেক বোলার। বুধবার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডকে এক প্রকার ধুয়েই দিয়েছেন আজমল।
‘পিসিবি আমার ক্যারিয়ার গড়ে দিতে সাহায্য করেছে। কিন্তু আমার বলতে কষ্ট হচ্ছে, যখন আইসিসি আমাকে নিষিদ্ধ করল, তখন তাদের পাশে পাইনি। বোর্ড আমাকে সাহায্য করেনি। যখন আমি নিষেধাজ্ঞায় পড়লাম, তারা অন্তত আইসিসিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারতো। কিন্তু বোর্ড সেটা করেনি।’
বিদায়কালে আইসিসিকেও একহাত নিয়েছেন ৪০ বছর বয়সী আজমল। তার মতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্তত ৯০ শতাংশ বোলার আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বল করেন না, ‘আমি ভগ্ন হৃদয়ে বিদায় বলছি, কারণ আমার মনে হয়েছে আইসিসির নিয়ম কানুন ঠিক ক্রিকেট বান্ধব নয়। যদি সকল বোলারকে পরীক্ষা করা হয়, দেখবেন ৯০ শতাংশ বোলার আইসিসির বেঁধে দেওয়া নিয়মে বল করে না।’
২০০৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশি বয়সেই পা পড়ে আজমলের। তবে পারফরম্যান্সে বয়সের ছাপ পড়েনি কখনোই। ১১৩ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৮৪ উইকেট। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ছিলেন আরও ভয়ঙ্কর। ৩৫ টেস্টে ১৭৮ বার আউট করেছেন ব্যাটসম্যানদের। টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন ৪ বার। বোলিং র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষেও ছিলেন বেশ কিছুদিন। টি-টুয়েন্টিতেও পারফরম্যান্স ছিল বেশ ঈর্ষণীয়। ৬৩ ম্যাচে পেয়েছেন ৮৫ উইকেট।