চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাবি প্রশ্ন: উপ-উপাচার্য সন্দিহান হলেও সমস্যা দেখেন না ডিন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় করা দুটি সাম্প্রদায়িক প্রশ্নের পেছনে কোন খারাপ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। বিষয়টি গুরুত্বসহ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন তিনি।

গত বুধবার চারুকলা অনুষদে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে একটি প্রশ্ন করা হয়: পৃথীবির সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি। এর উত্তরে চারটি ধর্মগ্রন্থের নাম দেয়া হয়। আরেকটি প্রশ্ন ছিল: মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?

পরে এই দুটি প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বক্ষেত্রে।বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এমন সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করার পেছনে দায়ীদের শাস্তি দাবী করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও এর সমালোচনা করেছেন।

এ ধরণের প্রশ্ন কেন করা হলো তা জানতে যোগাযোগ করা হয় রাবি’র চারুকরা অনুষদের ডিন মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, এ ধরণের প্রশ্ন দেয়া ঠিক হয়নি। মূলত সময় স্বল্পতার কারণে প্রশ্ন দুটি থেকে গেছে।

‘প্রশ্ন ফাঁস রোধে পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন বাছাই করা হয়েছিল। আমিও প্রশ্ন দুটি দেখেছিলাম, কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে অতটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবিনি। আর প্রশ্ন দুটি সাম্প্রদায়িকতার ইঙ্গিত দিলেও শিল্পকলা বা চারুকলার সৃষ্টির শুরুতে এই বিষয়গুলো সেভাবে দেখা হতো না।’

তিনি বলেন: চারুকলার আদিতে জাদুবিদ্যা, ধর্মীয় অনুভূতি এই বিষয়গুলো ছিল। চীন, জাপানসহ অন্যান্য দেশেও এগুলো ছিল, কিন্তু সেই প্রাচীন ধারণার সঙ্গে বর্তমানকে মেলানো যাবে না। আর সবাই তো চারুকলার ইতিহাস জানবেনও না।

তবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া বা সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারা থেকে এমন প্রশ্ন করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, বিভ্রান্তিকর এই প্রশ্নের কারণে শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দুটি প্রশ্নেরই নম্বর দিয়ে দেয়া হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত প্রশ্ন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত প্রশ্ন

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা অবশ্য বলেন, এমন প্রশ্ন করা মোটেও উচিত হয়নি। এটা কোনভাবেই হতে পারে না। এর পেছনে কোন উদ্দেশ্য থাকতেও পারে। যারা প্রশ্ন করেছেন তাদের ইনটেনশন পজিটিভ ছিল না।

‘বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপাচার্য স্যার চারুকলার ডিনকে ডেকেছিলেন। শুক্রবার ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় রোববার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’

তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য এখনো কোন কমিটি গঠন করা হয়নি। প্রয়োজনে তাও করা হবে। যদি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি গোষ্ঠী সবসময়ই বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে থাকে। এই ঘটনার পেছনে তাদের কোন হাত আছে কিনা জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য বলেন, সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।