আপিল বিভাগের আদেশ মেনে আরও ১ হাজার কোটি টাকা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)কে পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে গ্রামীণফোন।
গত ২৪ ফেব্রয়ারি আপিলেট ডিভিশনের রিভিউ পিটিশনের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে অডিট নিষ্পত্তির চূড়ান্ত ফলাফলের সাথে সমন্বয়যোগ্য শেষ কিস্তির ১ হাজার কোটি টাকা আগামী ৩১ মে’র মধ্যে বিটিআরসিতে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামীণফোন।
এর মাধ্যমে বিটিআরসিতে মোট ২০০০ কোটি টাকা দিচ্ছে গ্রামীণফোন। এর আগে গত ২৩ ফেব্রয়ারি বিটিআরসি’তে ১০০০ কোটি টাকা জমা দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যত ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া, গ্রাহকসেবার মান উন্নয়ন, ব্যবসায়িক পরিবেশে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় আদালতের সুরক্ষা প্রত্যাশা করে।
গ্রামীণফোন তার অবস্থান পূর্নব্যক্ত করে বলতে চায়, বিটিআরসির অডিট আপত্তি ও পাওনা দাবি একটি বিরোধপূর্ণ বিষয়। একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আদালতের বাইরে অথবা আদালতে গ্রামীণফোন এই বিরোধের নিম্পত্তি করতে আগ্রহী।
এর আগে বিটিআরসি’কে ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে আপিল বিভাগের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে গ্রামীণফোনের করা রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত গ্রামীণফোনকে বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আগে বিটিআরসিকে ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আসুন এরপর ওইদিন পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে।
গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে গত বছর দাবি করে বিটিআরসি।
একপর্যায়ে বিটিআরসির দাবি করা টাকার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তুলে নিম্ন আদালতে একটি টাইটেল স্যুট (স্বত্ত্বের মামলা) মামলা করে গ্রামীণফোন। ওই মামলাটি আদালত গ্রহণ করে। ওই টাইটেল স্যুটের অধীনেই গ্রামীণফোন বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে, যা গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত খারিজ করে দেন।
নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন। সেই আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিটিআরসি।
সেই আপিলের শুনানি নিয়ে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া সাপেক্ষে গ্রামীণফোনের কাছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশটি বাস্তবায়ন না হলে এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশটি (ভ্যাকেট) বাতিল হয়ে যাবে বলে তখন জানিয়ে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
আপিল বিভাগের এই আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি রিভিউ আবেদন করে গ্রামীণফোন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ২ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়ার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।