জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) তৃতীয় রাউন্ডের প্রথমদিনে সেঞ্চুরি করেছেন এনামুল হক বিজয়। ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ১১২ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন খুলনা বিভাগের ওপেনার। তার সেঞ্চুরির দিনে অন্য ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন লেগস্পিনার রিশাদ হাসান।
বিজয়ের ব্যাটিং নৈপুণ্যে প্রথমদিন শেষে ৯১ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯০ রান সংগ্রহ করেছে খুলনা বিভাগ।
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় খুলনা বিভাগ। ব্যাট হাতে ভালো শুরু হয়নি তাদের। নবম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় খুলনা। ডানহাতি পেসার সুমন খানের বলে ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি। সুমনের ওই ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন তিন নম্বরে খেলতে নামা মেহেদী হাসানও। তিনি শূন্য হাতে ফিরলে ১৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা।
এরপর শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান বিজয় ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তুষার ইমরান। তাই ২ উইকেটে ৮২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যেতে পারে খুলনা। বিরতির পরও ঢাকার বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন এই জুটি। ইনিংসের ৫৪তম ওভারেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের ১৯তম সেঞ্চুরি তুলে নেন বিজয়।
বিজয়ের সেঞ্চুরির পর হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন তুষার। তবে হাফসেঞ্চুরির পর ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনি। নামের পাশে ৫৫ রান রেখে ঢাকার বাঁ-হাতি স্পিনার তাইবুর রহমানের শিকার হন তিনি। ১২৪ বল মোকাবেলা করে ৬টি চার মারেন তুষার। তৃতীয় উইকেটে এনামুলের সাথে ১৬৬ রানের জুটি গড়েন তুষার। তুষারের বিদায়ের পর স্বেচ্ছা অবসর নেন বিজয়। ২০৫ বল মোকাবেলা করে ২৪০ মিনিট ক্রিজে থেকে ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন তিনি।
এরপর ক্রিজে গিয়ে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন আগের ম্যাচের হিরো উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। ১ রান করে তাইবুরের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ২২ রানের ব্যবধানে তুষার-নুরুলের সাথে এনামুলের (আহত অবসর) প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়াতে আবারো চাপে পড়ে খুলনা। সাত নম্বরে নামা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিঠুন। ওয়ানডে মেজাজে খেলে দ্রুতই হাফ-সেঞ্চুরির পথ উজ্জ্বল হয় তার। কিন্তু ঢাকার ডানহাতি লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৪৫ রানেই থেমে যান মিঠুন।
দলীয় ২৪৬ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে মিঠুনের পর ফিরতে হয় জিয়াকেও। ধীরে খেলে ২৭ রানে থেমে যান তিনি। এরপর দুই টেলএন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক দিনের বাকী সময়ে জুটি বেধে আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি। মিরাজ ৬ বাউন্ডারিতে ৩০ ও রাজ্জাক ৪ রানে অপরাজিত আছেন।
ঢাকা বিভাগের সুমন-তাইবুর ২টি করে উইকেট নেন।
অন্যদিকে, জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম দুই রাউন্ডে লেগস্পিনার না খেলানোর কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন রংপুর ও ঢাকা বিভাগের দুই কোচ। পরে বাধ্য হয়েই তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ঢাকা বিভাগের একাদশে জুবায়ের হোসেন লিখন ও রংপুর দলে সুযোগ পেয়েছেন রিশাদ হোসেন।
মাঠের পারফরম্যান্সেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন রিশাদ। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী বিভাগের ব্যাটিং লাইনআপ একাই কাঁপিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাঠে নেমে প্রথমদিনেই পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ১৭ বছর বয়সি লেগস্পিনার।
তবে পুরোপুরি হতাশ করেছেন আরেক লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন।
রিশাদের দারুণ বোলিংয়ে প্রথমদিন রাজশাহী অলআউট যায় ২০১ রানেই। দিনশেষে রংপুরও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। ৩২ রান তুলতেই হারিয়েছে ২ উইকেট।