ইয়াবাসহ মাদকপাচার বন্ধ ও সীমান্তে মিয়ানমারের স্থাপিত স্থলমাইন অপসারণে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈঠক সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার বিকালে মিয়ানমারের মংডুতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক থেকে ফিরেন বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আইনুন মোর্শেদ খান পাঠান।
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের মংডুতে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে সীমান্তের নানা পরিস্থিতি নিয়ে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। তবে এবারের বৈঠকে আলোচনায় বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় মাদকপাচার রোধ এবং সীমান্তে মিয়ানমারের স্থাপিত স্থলমাইন অপসারণ নিয়ে।
তিনি বলেন, বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের প্রধান আশ্বাস দিয়েছেন, সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা পাচার রোধে বিজিপি খুব গুরুত্ব সহকারে কার্যকর উদ্যোগ নেবে এবং বিজিবির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। এছাড়া বৈঠকে সীমান্তে মিয়ানমারের স্থাপিত স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি নাগরিকের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হলে তা অপসারণ নিয়েও যৌথভাবে টহল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, বিজিপির প্রতিনিধি দল প্রধান জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ইয়াবাপাচার রোধে তৎপরতা শুরু করেছে। সম্প্রতি ৩/৪ জন পাচারকারিকে ইয়াবাসহ আটক করেছে। এটি অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে যৌথভাবে টহলের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এতে ইয়াবাপাচার রোধ এবং স্থলমাইন অপসারণ ছাড়াও পতাকা বৈঠকে সীমান্তে মানবপাচার, চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের যাতায়াত বন্ধে নানা দিক নিয়েও আলোচনার কথা বলেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আইনুন মোর্শেদ খান পাঠান।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু সীমান্তের শূণ্যরেখায় খালের উপর স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের কাছে নির্মাণাধীন স্থাপনার কিছু ছবি দেখিয়েছি। এ বিষয়ে কেন তথ্য জানানো হয়নি তা জানতে চেয়েছি। তবে এ জন্য মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে জানানো হয়, এটি কোন ব্রিজ নয়; মূলত সীমান্তে কাঁটাতারের বেঁড়া নির্মাণে খুঁটি স্থাপনে কাজ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে বিজিবিকে অবহিত করা হবে।
সোমবার সকাল ৯ টায় টেকনাফ স্থলবন্দরের ট্রানজিট ঘাট থেকে নাফ নদী হয়ে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে রওনা দেন। সেখানে পৌঁছার পর সকাল ১১ টায় মংডুতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে পতাকা বৈঠক শেষে বিকাল সাড়ে ৫ টায় প্রতিনিধি দলটি ফিরে আসে।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আইনুন মোর্শেদ খান পাঠানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্ণেল এস এম বায়েজীদ খান ও বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার জহিরুল হক খানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাটালিয়ানের কমান্ডার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
বৈঠকে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিন থিনের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন।