তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছাঁটাইয়ের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, নতুন পরিচালনা পরিষদ বিজিএমইএ’কে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এ কারণে পুরনো যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন তাদের থেকে কিছুসংখ্যক জনবল বাদ দেয়া হতে পারে। এই তালিকায় আনুমানিক ৮০ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে যারা বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তিতে খুব বেশি দক্ষ নয় তারাই রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।
তবে বিজিএমইএ’র শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবরটি সঠিক নয়। তারা মানব সম্পদ বিভাগ তথা পুরো বিজিএমএকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই লক্ষ্যে চলছে ইন্টারনাল অডিট (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা)। সেখানে উঠে আসবে কারা ভাল কাজ করছে বা করছে না।
কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাইয়ের বিষয়ে বিজিএমইএ’র জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আসলে এরকম কিছু্ই না। তবে বিজিএমইএ’কে আরো গতিশীল তথা বিজিএমইএ’র প্রশাসনকে আরো যুগোপযুগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা একটা ম্যানেজমেন্ট অডিট করছি। এই অডিটের মাধ্যমে ভাল-মন্দ দেখা যাবে।
‘কারণ কারখানাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে বিজিএমইএ। তাহলে বিজিএমইএর মানব সম্পদকেও সেই পরিমাপের হতে হবে। তবে ছাঁটাইয়ের বিষয়টি ঠিক নয়।’
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা এইচআর রিভিউ (মানব সম্পদ মূল্যায়ণ) করছি। এটা তো করা খুবই স্বাভাবিক। যেহেতু নতুন পরিচানা পরিষদ দায়িত্ব নিয়েছে তাই দেখতে হবে কে কতটুকু কাজ করছে। তবে এটা অ্যাডমিন ডিসাইড (প্রশাসন সিদ্ধান্ত) নিবে। আমি করবো না।
‘২০ জুলাই পরিচালনা পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা এবং ওই বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। এ তথ্যের সত্যতা কতোটুকু?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয় তা সাংবাদিকদের জানানো হবে।
তবে সাবেক পরিচালনা পরিষদের নেতারা বলছেন, যারা অদক্ষ তাদেরকে স্বল্প পরিসরে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা সম্ভব। বিজিএমএর পক্ষে তা খুবই সহজ বিষয়। কিন্তু চাকরিচ্যূত করা হলে তাদের বেকারত্ব বরণ করতে হবে। এতে তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ করে বিজিএমইএর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিজিএমইএর সাবেক দুই নেতা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ছাঁটাইয়ের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তবে এই সংগঠনে অনেক পুরনো লোকবল রয়েছে। যাদের কর্মজীবনের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর। হুট করে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া যৌক্তিক হবে কি না সে বিষয়েও বলবো না। তবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব। এবং এটা বিজিএমইএ চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।
সূত্র জানায়, বিজিএমইএতে কয়েকটি বিভাগকে আলাদা না রেখে একীভূত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ সংগঠনের বর্তমান পরিচালনা পরিষদ চাচ্ছে বিজিএমইএকে আধুনিকভাবে সাজাতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রযুক্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে। কিন্তু পুরাতনদের মধ্যে এখনো কেউ কেউ আছেন যারা আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সেভাবে তাল মিলিয়ে উঠতে পারছেন না।
জানা গেছে, ওই তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারের কয়েকটি প্রকল্পের দায়িত্বেও নিয়োজিত। এ ধরনের ৮ থেকে ১০টি প্রকল্প রয়েছে। যেগুলো পরিচালিত হয় বিজিএমইএর অধীনে।