চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বিজয়ের ৪৫ দিন পর মুক্ত হয় মিরপুর

আজ মিরপুর মুক্ত দিবস। ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হলেও রাজধানীর মিরপুর ছিলো স্বাধীনতা বিরোধীদের দখলে। ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপণ লড়াইয়ে, মুক্ত হয় মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন মিরপুর।

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর পরাজয় মেনে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। দেশজুড়ে যখন বিজয়ের আনন্দ তখনও অবাঙ্গালি অধ্যুষিত রাজধানীর মিরপুরে উড়ছিলো পাকিস্তানের পতাকা। স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সেস ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পলাতক সদস্যরা ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলো সেখানে।

বাঙ্গালির বিজয়ের পরও সুযোগ পেলেই বাঙ্গালী নিধনে মেতে উঠতো তারা। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরও চলছিলো তাদের নারকীয় হত্যাকান্ড। মুক্তিযোদ্ধাদের সব চেষ্টা চলছিলো মিরপুরকে মুক্ত করার।

মুনতাসির মামুন বলেন,‘ এটা অবিশ্বাস্য মনে হবে যে ঢাকা শহর মুক্ত হয়েছে মিরপুর মুক্ত হয় নাই। মনে রাখতে হবে মিরপুর কিন্তু একটা দুর্ভেদ্য এলাকা ছিলো। সেখানে অবাঙালিদের সংখ্যা ছিলো বেশি। তাদের ঘাঁটি থেকে একেবারে সব বাঙালিকে ছাড়িয়ে আনার কোনো কৌশল ছিলো না বলেই দেরী হয়েছে মিরপুর মুক্ত হতে।’

মিরপুরে এতো অস্ত্র জমা ছিলো যে মুক্তিযোদ্ধারা পেরে ওঠছিলেন না। ২৯ জানুয়ারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে মিরপুর মুক্ত করার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। ৩১ জানুয়ারী শেষ রণাঙ্গনের সেই যুদ্ধের ভয়াবহতা ডেল্টা কোম্পানীর কমান্ডার হেলাল মোর্শেদের স্মৃতিতে আজও উজ্বল।

তিনি জানান,‘ আমাদের কাজ ছিলো এলাকাটিকে দখলে রাখা। সাহসের সঙ্গে বিহারীদের মোকাবেলা করা। দখল ধরে রাখাটাও ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ।’

পরবর্তী সময়ে ৪র্থ ও ১১ বেঙ্গল রেজিমেন্ট মিরপুর থেকে ৪ ট্রাক অস্ত্র এবং গোলা-বারুদ উদ্ধার করে। ছিলো কয়েকটি ভারী মেশিনগানও। শেষ যুদ্ধ জয়ে ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারী মিরপুরের সার্বভৌমত্ব ফিরে পায় বাংলার মানুষ।