জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে চুরি গেছে শতাধিক বিদ্যুত চালিত গভীর ও অগভীর নলকূপের মিটার ও ট্রান্সফারমার। চুরি যাওয়া মিটার ও ট্রান্সফরমার ফেরত পেতে চোরদের রেখে যাওয়া চিরকুটে বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে। অনেকে এ পন্থায় মিটার ফেরতও পেয়েছেন।
জেলায় বিদ্যুত চালিত গভীর নলকূপের সংখ্যা এক হাজার ৬শ ৫০টি। এর মধ্যে ৯৬০টি চালু আছে ক্ষেতলাল, কালাই ও আক্কেলপুর উপজেলায়। এ তিন উপজেলার মাঠ থেকে অন্তত শতাধিক গভীর নলকূপের মিটার চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র।
মিটারের পাশাপাশি চুরি যাচ্ছে ট্রান্সফরমারও। চুরির দু’একদিনের মধ্যেই চোরদের রেখে যাওয়া বিকাশ নাম্বারে যোগাযোগের মাধ্যমে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরতও নিয়েছেন কোনো কোনো নলকূপ মালিক।
বিকাশ নাম্বার দিয়ে ফেরত পাওয়া স্থানীয় গভীর নলকূপ মালিক বলছেন, আমার নলকূপটি চুরি করে বাসার সামনে একটি মোবাইল নাম্বার রেখে যায়। এবং একটি চিরকুটে লিখে যায়, কেনো ভয় নাই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলেই মিটার ফেরত পাওয়া যাবে। পরে আমি ওই নাম্বারে যোগাযোগ করলে সাত হাজার টাকা বিকাশ নাম্বারে পাঠাই এরপর আমাকে ফোন দিয়ে জানায় কোথায় আছে আমার মিটার।
আর এ এলাকায় মিটার চুরির বেড়ে যাওয়ায় সেচ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন কৃষক।
বিড়ম্বনায় পড়া কৃষকরা বলছেন, এই যে মিটারগুলো চুরি হচ্ছে তার কারণে মেশিনগুলো বন্ধ থাকছে। আর বন্ধ থাকার কারণে জমিতে পানি না দেয়ার আমাদের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
হয়রানি এড়াতে চোরদের সাথে দফা-রফায় বাধ্য হচ্ছেন গভীর নলকুল মালিকরা। জয়পুরহাট জেলার গভীর নলকূপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অফির উদ্দিন বলেন, আমরা চোরদের টাকা যদি না দেই তাহলে চোররা বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুত সমিতি। জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুত সমিতি ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহিনুর রহমান বলেন, প্রশাসন যদি এ বিষয়ে একটু গুরুত্ব দেয় তাহলে অপরাধীদের ধরতে বেশি সময় লাগবে না।
তবে পুলিশ বলছে তাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ যায়নি এখনও। তারপরও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করবো। নিশ্চয় এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার আমরা তা নিবো। চুরি রোধ ও চোরদের গ্রেফতারে দ্রুত পুলিশী উদ্যোগ দেখতে চায় ভুক্তভোগীরা।