আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতার তৃষ্ণায় কাতর নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ গরম করা বক্তব্য দেওয়া বিএনপি নেতারা ভালোভাবেই জানে যে, তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। প্রত্যুষেই ঝরে পড়বে ষড়যন্ত্রের অন্ধকারে বোনা তাদের আকাঙ্খার সব স্বপ্নকলি।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে বিএনপিই বিভাজন রেখা ও ঐক্যের সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতারা বলছে, তারা নাকি বিভাজনের রাজনীতি করে না! বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য ভূতের মুখে রাম নাম ধ্বনি ছাড়া কিছু নয়। এদেশের রাজনীতিতে বিএনপিই বিভাজন রেখা ও ঐক্যের সঙ্কট সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের পরিকল্পিতভাবে লাগাতার মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
কাদের বলেন, শুধু তাই নয়, সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও বিদ্বেষ সৃষ্টি এবং রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহারের অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক হলো বিএনপি। তাদের চাতুর্যপূর্ণ কথামালার আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে ভয়ঙ্কর কুৎসিত পরিকল্পনা।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন যাদের অস্থিমজ্জায়, দুর্নীতি আর লুটপাট যাদের রাজনীতি তারা যতই চটকদার কথা বলুক না কেন জনগণ এখন আর তাদের এসব অপকৌশলে আস্থা রাখে না। স্বৈরশাসন, অপপ্রচার, গুজব, মিথ্যাচার, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও ধর্মান্ধতা নির্ভর রাজনীতির কারণে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘বিএনপি ঐক্যের রাজনীতি করে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ জানতে চায় এ ঐক্য কাদের সাথে? কীসের ঐক্য? বিএনপির ঐক্যের রাজনীতি তো দেশদ্রোহী-জাতিদ্রোহী স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে। তাদের ঐক্য তো সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ ও জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে।
তিনি বলেন, তাদের তথাকথিত ঐক্যের মূলে দেশ বিরোধিতা আর উন্নয়ন বিমুখতা। তারা ঐক্য করে স্বার্থসিদ্ধি ও লুটপাটের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। তাদের দুঃশাসন ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ইতিহাস তারই সাক্ষ্য বহন করে। তারা বার বার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই বিএনপিকে এদেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলার জনগণ তাদেরকে আর রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না তা আজ প্রমাণিত সত্য।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, চরম হতাশায় নিমজ্জিত বিএনপি নেতারা লাগাতারভাবে অসংলগ্ন, অবাস্তব ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মন্তব্য করে চলেছে। দেশের অভ্যন্তরে নানামুখী অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকা- ও ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশ ও জনগণ বিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এখন পথিকের মতো প্রলাপ বকতে শুরু করেছে।
কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে আটক রাখা বা ছেড়ে দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের নেই। কেননা বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তাদের আরেক নেতা তারেক রহমানও সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দায়ে আদালত কর্তৃক দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামী। দুর্নীতি তাদের অস্থিমজ্জায়। সুতরাং দুর্নীতিকে বৈধতা দিতে বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির রাজত্ব ও রাজনীতি কায়েম করতে গিয়ে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশবাসী অতীতে প্রত্যক্ষ করেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে বিএনপির আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি, পল্টনে বিএনপি’র কার্যালয়ের সামনে তাদের সমাবেশস্থল ছিল জনশূন্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনগণের সাড়া না পেয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় বিএনপি। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং মানুষের বাড়ি-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি। অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে দেশের জনগণ। ফলে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলেছে বিএনপি। তাদের স্বপ্নের মরা গাঙ্গে আর জোয়ার আসবে না।