মুক্তিযোদ্ধা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন, প্রাণরক্ষাকারীকে হত্যা, নানা প্রলোভনের টোপ দিয়ে অন্য দলের নেতা ভাগানো, খুনীর গায়ে রাজনৈতিক লেবাস পরানো প্রভৃতি কলঙ্কের কালিমা জনমনে প্রকাশ্য। তারই কলঙ্কময় পথ চলাকে অনুসরণ করে চলেছেন বেগম খালেদা জিয়া। সুযোগ্য স্বামীর সুযোগ্য স্ত্রী বটে! যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হলো।
রাজাকার সাকা এখন কবরে থেকেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা রয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধের প্রমাণিত অভিযোগ দলটিকে নড়াতে পারেনি। পাকিস্তানের সাথে সুর মিলিয়ে বিএনপিও সাকার সাফাই গাইছে। তবে কি যারা যে দেশে রাজনীতি করবে, দল চালাবে সেদেশের আইনের প্রতি তাদের মান্যতা না থাকলেও চলবে? সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেতো কর্নেল তাহেরের মত প্রহসণ মূলক বিচারের রায়ে ফাঁসি দেয়া হয়নি।
দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ায় উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক ও বিতর্কের মাধ্যমে তা সম্পন্ন হয়েছে। তবে কি বিএনপি এই রায়কে প্রহসন বলবেন? এটা প্রহসন হলে তাহেরের ফাঁসি কার্যকরকে কী বলবেন তারা? কলঙ্ককে পুষ্পচন্দন যারা ভাববে তাদের আর কলঙ্কের ভয় কী? নইলে যুদ্ধাপরাধীর প্রমাণিত অভিযোগের পরে বিএনপি হতে সাকাকে বহিস্কারের ঘোষণা দেখত মানুষ। তারা এমনটি যদি করে বসে যে সাকার সম্মানে ও তার প্রতি প্রেমে সাকার পদটি শূন্য রাখা হবে।
তাকে স্মরণ করে নেতারা মঞ্চে ও সংসদে খিস্তি খেউর করবে। কলঙ্ককে ফুল চন্দন বেছে নেয়া দলটির পক্ষে এমনটিও সম্ভব।রাজাকার প্রেম ও জামাত প্রেমের লাইন তাদের বহে সমান্তরাল।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। আসছে পৌর নির্বাচনে তারা দলীয় ভাবে অংশ নিতে পারছে না। এখন কথা হচ্ছে যে দলটি নির্বাচনে অযোগ্য সেই দলটি একটি নির্বাচনে জোটে থাকে কী করে? এব্যাপারে কি নির্বাচন কমিশনের কোনো করণীয় নেই?বিগত দিনে আমরা দেখেছি ১৪ দলের নৌকা ও ১৮ দলের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জোটগত ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
এবার ২০ দল যদি তাদের একক প্রতীক ধানের শীষ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ও সেই সুযোগে জামাত প্রার্থীরা নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে পড়ে তখন কী ভূমিকা নেবে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধন বাতিল হওয়া নির্বাচনে অযোগ্য কোন রাজনৈতিক দল কোন নির্বাচনী জোটে থাকতে পারবেনা ও কেউ তাকে কোন জোটে রাখতে পারবেনা এমনটাইতো বিধিসম্মত রীতি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাতো হচ্ছেনা। কলঙ্কপ্রিয় বিএনপি সাকা চৌধুরীকেও যেমন বাদ দিচ্ছেনা তেমনই জামাতকেও বাদ দেবে না। বাদ দেয়ানোর ক্ষেত্রে সরকার ও নির্বাচন কমিশন কী ভূমিকা নিতে পারে সেটাই বিবেচ্য।
কলঙ্ককে ফুলচন্দন করে নেয়া বিএনপি আর কলঙ্কে পিছু হটছে। পিরীতি তো কাঁঠালের আটা যারে ধরে তারে ছাড়েনা। ছাড়ানোর জন্য কেউ সরিষার তেল দেয়, কেউ কেরোসিন, মবিল দেয়। রাজাকার ও জামাতী প্রেম ছাড়াতে নির্বাচন কমিশন কমিশন কী দেবে। সরকার কী দেবে ও কীভাবে দেবে সেটাই ভাববার।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)