‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে সরকার জিততে পারবে না বলেই স্থগিত করা হয়েছে’ – এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে ঢাকার ৫নং বিশেষ আদালতে এসে ডিএনসিসির উপ-নির্বাচন হাইকোর্টে স্থগিতের বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘এ নির্বাচনে কমিশনের (নির্বাচন কমিশন) ব্যর্থতা রয়েছে। তারা কিছু ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ না করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।
একই বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ত্রুটিপূর্ণ তফসিলের কারণেই সংক্ষুব্ধরা রিট করার সুযোগ পেয়েছেন।
বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সিইসি আওয়ামী লীগের মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। ডিএনসিসিসহ ঢাকা সিটিতে যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে ক্ষমতাসীনদের ভরাডুবি হবে এটা সরকারি দল নিশ্চিত জানে। গণমাধ্যমেও এ রকম খবর বেশ কয়েকদিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এ বছর হওয়ার কথা। তাই ঢাকা সিটিতে বিপুল ভোটে পরাজিত হলে আওয়ামী লীগের জাতকূল কিছুই থাকবে না। তাই সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন আইনি ত্রুটি রেখে এ তফসিল ঘোষণা করেছেন। এটা সরকারেরই নীল নকশার একটা অংশ।’
রিজভী অভযোগ করেন, গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এখন যিনি প্রার্থী হবেন তিনি জানেন না তিনি ভোটার কিনা। তাছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫ (৩) উপধারা অনুযায়ী ‘মেয়রের পদসহ কর্পোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, কর্পোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’ এ আইন মতে, উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড মিলে কাউন্সিলর শতকরা ৭৫ ভাগ হয় না। কারণ নতুন ১৮টিতে তো নির্বাচনই হয়নি।
তিনি বলেন, তাছাড়া সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যারা কাউন্সিলর হবেন তারা কত দিনের জন্য নির্বাচিত হবেন। তারা কি পাঁচ বছরের জন্য হবেন, না আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। তা নির্ধারণ করেননি কমিশন। এ সকল ক্রুুটির কারণেই রিট করার সুযোগ পেয়েছেন সংক্ষুব্ধরা।
বিষয়টিকে রিজভী ডিএনসিসি নির্বাচন বানচাল করা পূর্ব পরিকল্পিত নীলনকশা এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রযোজনা বলে দাবি করেন।
বুধবার ডিএনসিসির উপ-নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রাজধানী উত্তরের দুই ভোটারের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। যিনি প্রার্থী হবেন তিনিও জানেন না তিনি ভোটার কিনা। তাছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছে না।