প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রীর। রাজস্ব আয় লক্ষ্য অর্জন নিয়েও সমালোচকদের শঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৬ হাজার কোটি আয় না হওয়ার ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন মন্ত্রী। বলেছেন, দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাজেটে এমন কোন পদক্ষেপ থাকলে তা সংশোধন করা হবে।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটত্তোর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী পরিষদের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। প্রায় দেড় ঘন্টা গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীদের নানা জিজ্ঞাসার জবাব দেন তারা। ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনা আদৌ বাস্তবায়ন হবে কিনা -ঘুরে ফিরেই এই প্রশ্ন এসেছে। ‘বেশি আয় করে বড় ব্যয় করার লক্ষ্য অপূর্ণ থাকায় বাজেটের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে’-সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডি’র এই বিশ্লেষণেরও জবাব দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ইচ্ছা করেই বাজেট কম রাখতে পারে কেউ, যাতে আরও ভালো পারফর্ম করা যায়। এরকমটিও আমি করেছি। আমিই একমাত্র মন্ত্রী যার বাজেট ওভার পারফর্মড হয়েছে ১৯৮৩-৮৪ সালে। বাংলাদেশের একমাত্র এই অর্থবছরের বাজেটই পাবেন, যেখানে বাজেটের চেয়ে পারফম্যান্স বেটার। তো এইটা আবার প্রুভ করার কোন প্রয়োজন নাই।
জনবল বাড়ানো এবং এনবিআর’এর সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ২ লাখ ৩ হাজার কোটি অর্জন হবে বলে জোর আশাবাদ অর্থমন্ত্রীর।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এই ৭ বছরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাজস্ব বিভাগে কয়েক হাজার নতুন লোক নিযুক্ত হয়েছেন। নতুন নতুন অফিস হয়েছে। ৯৬টি উপজেলায় তাদের অফিস বিস্তৃত। এটাও আমরা বাড়াচ্ছি। প্রত্যেক উপজেলায় অফিস হবে। তাদের প্রশিক্ষণ অনেক হয়েছে এবং তাদের আমি ৭ বছর কাজ করতে দেখেছি।
“আমার মনে হয় এই বছরের পারফর্ম্যান্স দুর্ভাগ্যজনক। এই প্রতিষ্ঠানের আরও উপরে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। সেই জন্য আমি ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর আদায়ের প্রস্তাব করেছি।”
বাজেটে ঘোষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন লক্ষ্যমাত্রা ৭.২শতাংশ কতোটা যৌক্তিক, তার জবাবে মন্ত্রীরা বলেছেন, এটা অর্জন করে দেখানো হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করেই কিন্তু আমরা বাজেট এবং আমাদের কার্যক্রম দিচ্ছি। সুতরাং অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু এটা একটা চমৎকার বাজেট। তারপরেও একটু এদিক ওদিক হলে তা সংশোধন করার সময় আমাদের রয়েছে। প্রতি বছরই তা আমরা করে থাকি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পার কেপিটা প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়েও আমরা কিন্তু ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবো।
বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।