টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে নিয়মিত দল বাংলাদেশ। এখনও অবশ্য ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে নামা হয়নি রুমানা-সালমাদের। যা আক্ষেপ গোটা দলের। বাছাইপর্ব উতরে এবার মূল আসরে খেলার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ টিম টাইগ্রেস। বিকেএসপিতে পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি।
২১ নভেম্বর জিম্বাবুয়েতে শুরু হবে ২০২২ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব। হারারেতে দশ দলের আসর শেষ হবে ৫ ডিসেম্বর। সেখান থেকে তিন দল টিকেট কাটবে নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের। সরাসরি অংশ নেবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা, ভারত ও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। আট দলের বৈশ্বিক আসর শুরু আগামী বছরের মার্চে।
বাংলাদেশ নারী দলের ওয়ানডে অধিনায়ক রুমানা আহমেদ ভালো সুযোগ দেখছেন নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের ব্যাপারে। চ্যানেল আই অনলাইনকে লাল-সবুজ অলরাউন্ডার শোনালেন সে কথাই।
‘কিছু করতে হবে, এই মনোবল নিয়ে আমরা বাছাইপর্ব খেলতে যাব। এবার খুব ভালো সুযোগ দেখছি। গত চার বছরে আমরা খেলায় বেশ উন্নতি করেছি। সিনিয়র-জুনিয়র মিলে একটা ইউনিট হয়ে মাঠে লড়ি। দলের সবার চাওয়া একটাই, বিশ্বকাপ খেলব। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা তৈরি হচ্ছি।’
বাছাইপর্বে বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে অংশ নেবে। দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে ১০ দেশ। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে যাদের মধ্যে বাংলাদেশের (অষ্টম) চেয়ে এগিয়ে আছে কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ষষ্ঠ) ও পাকিস্তান (সপ্তম)।
২০১৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার বেশি আশাবাদী হওয়ার পেছনের কারণও ব্যাখ্যা করলেন রুমানা।
‘আগে দেখা যেত কয়েকটি বড় নামের উপর দল নির্ভর করত। তারকা খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। খেলার সুযোগ কম পেলেও দল হিসেবে আমরা খেলি। দলে যারা নতুন তারাও দারুণ অবদান রাখছে। যদিও ফরম্যাট ভিন্ন তারপরও বলি, ২০১৭ সালের পর ২০১৮তে আমরা এশিয়া কাপ (টি-টুয়েন্টি) জিতলাম। তারপর থেকে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সব কিছুতেই উন্নতি করতে শুরু করেছি। ওয়ানডে খেলা কম হলেও আমরা আশাবাদী। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে আমরা বেশ ভালো দল।’
বাছাইপর্বের তারিখ চূড়ান্ত হতেই ২৬ ক্রিকেটারকে নিয়ে বিকেএসপিতে ক্যাম্প শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আগামী মাসে নিজেদের মধ্যে হবে টুর্নামেন্ট। বাছাইপর্বে যাওয়ার আগে দেশের মাটিতে প্রস্তুতির বড় অংশ ঘরোয়া আসরটি। জাতীয় দল, ইমার্জিং দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে চারটি দল বানিয়ে সবাইকে বায়ো-বাবলে রেখে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।
বাছাইপর্ব শুরুর আগে জিম্বাবুয়ে গিয়ে ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এতে নিজেদের পরখ করার সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করেন রুমানা।
‘এখন আমাদের সবার মাঝে একটা স্বপ্ন, বিশ্বকাপে খেলব। যেটি সত্যি করতে হলে বাছাইপর্বের আগে একটা আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলা জরুরি। যদি সেটি পাই তাহলে নিজেদের পরখ করতে পারব। দীর্ঘদিন ধরে আমরা খেলার বাইরে। জিম্বাবুয়ের কন্ডিশনও আমাদের কাছে একদমই অচেনা। আগে গিয়ে সিরিজ খেলতে পারলে খুব ভালো হবে। সাকিব-তামিম ভাইয়েরা এবার খুব ভালো খেলেছে হারারেতে। তাতে আমরাও সাহস পাচ্ছি ওখানে গিয়ে ভালো কিছু করতে।’
২০২২ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর শুরু হবে আইসিসি উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। ২০২৫ সাল পর্যন্ত চক্রে এবার দল বেড়ে হচ্ছে ১০টি। বাছাইপর্ব থেকে বিশ্বকাপের টিকেট পাওয়া তিনটি দল ছাড়াও চতুর্থ ও পঞ্চম হওয়া দল ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা পাবে।
রুমানারা পাঁচ দলে মধ্যে থাকলে সুযোগ হবে সারাবছর ম্যাচ খেলার। সিরিজ খেলার জন্য তখন আর অন্য দেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না বিসিবিকে। আর সেরা তিনে থাকতে পারলে তো কথাই নেই, প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও পূরণ হবে লাল-সবুজের মেয়েদের।