ভাষা সংগ্রামী কাজী গোলাম মাহবুব টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি (সহ-সভাপতি) নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৪৮ এর ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের একজন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। ১৯৪৮ এর ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনে পিকেটিং করতে গিয়ে আহত এবং গ্রেপ্তার হন।
১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দাবি আদায়ে ধর্মঘটে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। এ কারণে তিনি ২ মাস কারাগারে ছিলেন।
১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয় কাজী গোলাম মাহবুবকে। ভাষা আন্দোলনের কারণে হুলিয়া জারি হলে আত্মগোপনে চলে যান। পরে অবশ্য জননিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাগারে থাকেন।
১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ সালে বৃহত্তর বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৬৬এর ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হলে এর বিরোধিতা করেন।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং বিএনপির গবেষণা কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৩-৯৪ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। বিএনপির পক্ষে জাতীয় সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন তিনি।
সম্মাননা: ২০০২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম স্বর্ণ পদক, ১৯৯৮ সালে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট পদক, ২০০০ সালে তমদ্দুন মজলিশের মাতৃভাষা পদক, ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের ভাষা সৈনিক পদক।ঢাকা সিটি কর্পোরেশন তার নামে ধানমন্ডি ১০ নম্বর সড়কের নাম করণ করে ‘কাজী গোলাম মাহবুব সড়ক’।
মৃত্যু: ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ তিনি ইন্তেকাল করেন।
সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সামনে ভাষা সৈনিক চত্বর তৈরি করিয়েছেন কাজী গোলাম মাহবুবব। সাক্ষাতকার শুরু ভাষা সৈনিক চত্বরে।
তা. ই. মাসুম: স্যার, ভাষা আন্দোলনের পর জাতি হিসেবে আমাদের কী করা উচিৎ ছিল? কী করতে পারিনি?
কাজী গোলাম মাহবুব: ভাষা আন্দোলন, এটা জাতীয় ইতিহাসের একটা ল্যান্ডমার্ক। একটা জাতি তার অস্তিত্ব, তার চিন্তা-চেতনা, তার অধিকার, তার পৃথিবীতে তার বিচরণ, তার ভাষা দিয়েই সাধারণত হয়।
আল্লাহ নিজেই বলেছেন, আল্লাহ তা’লা বলেছেন যে, আমি তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য দিয়েছি, সুতরাং এই ভাষা আন্দোলনটা আমরা খুব সোজাভাবে দেখলে বা সাধারণভাবে দেখলে জাতি খুব ভুল করবে।
বাঙালীদের একত্র করা, এটা একটা বিশাল ব্যাপার। মানে ১০ জন বাঙালী থাকলে ৪টা ইয়ে হয়, অর্গানাইজেশন। এই বাঙালীদের একত্রিত করা, ইজ এ ভেরি বিগ থিং।
১৯৫২ সালের সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে যে, সমস্ত বাঙালীর, সমস্ত দলকে একত্রিত করা এই সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের মাধ্যমে। এইটা হল বড় প্রাপ্তি। যে বাঙালীরা একত্র হইছে সর্বদলীয় এটা একটা বিরাট পয়েন্ট। দিস ইস এ বিগ পয়েন্ট।
কারণ, নজরুল ইসলামও বলে গেছেন যে, বাঙালীরা যদি একত্র হইতে পারে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারবে। এই বাংলা, এই ভাষা আন্দোলন তার দৃষ্টান্ত! আমরা, এই বাঙ্গালীদের প্রাপ্তি।
একটা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে চলে যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিকতাটা কী? আনুষ্ঠানিকতা হইল যে, আমরা যা করি সেটা, দেশ এবং মানুষের কল্যাণে আমরা বেশি না করে, আমরা এটা একটা উৎসব! আমরা একটা উৎসব হিসেবে এটাকে আমরা সামনে তুলে ধরছি।
১৯৫২ সালে এতবড় বিশাল আন্দোলন হল। সমস্ত বাঙালী একত্র হইয়া সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কইরা, খালি রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠা না, পৃথিবীর সামনে এটা ভাষা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি!
এত বিশাল পাওনা, বাঙালীরা একত্র করতে পারল না। নিতে পারল না। নিতে পারল না। তারা বাইরে খালি উৎসবমুখর। এবং বাঙালীদের সম্বন্ধে যেটা সবচেয়ে বেশী অভিযোগ, সেটা হচ্ছে যে, বাঙালীরা, তারা একত্র হইতে পারে না ।
তা. ই. মাসুম: জ্বি ।
কাজী গোলাম মাহবুব: আপনে যদি আজকে দেখেন! সবচেয়ে বড় জিনিসটা আজকে যদি দেখেন, ১৯৫২ সনে ভাষা আন্দোলন হইল, এত সমস্ত মানুষ জীবন দিল। ভাষা প্রতিষ্ঠিত হইল! কিন্তু আজকে চারদিকে দেখেন! ভাষার ব্যাপারে, আজকে যদি শিক্ষা, দীক্ষায় সম্পদশালী করতে হত, তাহলে দেশটা সম্পদে ভরপুর হয়ে যেত।
তা. ই. মাসুম : জ্বি ।
কাজী গোলাম মাহবুব: কিন্তু আমরা কী দেখি!? মানুষের মধ্যে বিবাদ, আমার প্রতিপত্তি থাকতে হইবে। অমুকের প্রতিপত্তি, মানুষের কোনো ব্যাপারই নাই! সুতরাং এদের সমস্ত কিছু হইতে পারে, কিন্তু দেশের কল্যাণ আসবে না, বয়ে আসবে না।
আমরা তো একদিকে ভাষা আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছি। আজকে প্রায় ৫০ ভাগ লোক, ৫০ ভাগের বেশি অশিক্ষিত। শিক্ষা জানে না! এসব মানুষকে সম্পদশালী না করলে, দেশ সম্পদশালী কেমনে হবে? অশিক্ষিত রাখলে?
সুতরাং আমরা যতো রাজনীতি করি, আমাদের কতগুলো লোকের স্বার্থে আমরা রাজনীতি করি। আমরা ব্যাপকভাবে মানব কল্যাণে যদি আজকে রাজনীতি করতাম?
তা. ই. মাসুম: এবার চলেন আমরা আমতলা যাই।
কাজী গোলাম মাহবুব: উম!
(আমরা চলে এলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে, যেখান থেকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে ছিলেন ছাত্ররা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সীর ওখানে একটা ফলক আছে। সেখানে লেখা আছে।
(‘ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত আমতলার ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণ থেকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এইখানে ছাত্রসমাজ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে’।
উদ্যোক্তা, ভাষা আন্দোলন পরিষদ।)
ওখানে নেমে কাজী গোলাম মাহবুব দেখালেন আমতলা, আমাকে দেখালেন কোথায় কী হয়েছিল। এখন সেখানে অনেকগুলো ছোট ছোট দোকান আখের রস বিক্রি হয়। এর পর গেটের ভেতরে গিয়ে দাঁড়ালাম)
কাজী গোলাম মাহবুব : ঐ জায়গায়, এই দিকে এই দিকে থেকে।
(ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে বন্ধ গেটটি দেখিয়ে)
এটাতো এখানে ছিল না।
এই সরকার হরতাল বন্ধ করে দিল (১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে) এটা বিকেলের দিক দিয়া দিছে (২০শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২) আমাদের একটা সভা হইছিল (নবাবপুর রোডে আওয়ামী লীগ অফিসে ২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে)। ঐ সভায় আমরা ইনোনোমাসলি, আমরা মোটামুটি (১৪৪ ধারা) হরতাল না ভাঙ্গার জন্য বিশেষ কারণে এটাকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
কিন্তু এখানে ইউনিভার্সিটিতে (২১শে ফেব্রুয়ারি) কিছু সাহসী ছেলে আছে। তারা হরতাল (১৪৪ ধারা) ভঙ্গ করবে। আমরাও আসছি।
আমি আর শামসুল হক সাহেব। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ছিলেন। খুব অবদান আছে ভাষা আন্দোলনের জন্য। আমি সে, আমাকে অসম্ভবভাবে সাহায্য করেছে। শামসুল হক সাহেব আমরা আসলাম।
কিন্তু আইসা দেখলাম যে, এরা এত উত্তেজিত! ছেলেরা! আমরা এখন দেখলাম। তো, ওদের, পোলাপানের সাথে তো আর রাগ করা যায় না? (হাসতে হাসতে) তো আমরা আন্দোলনটা, আমাদের নিজেরাই নিয়া নিলাম। এই আন্দোলনে যাতে খারাপ কিছু না হয়। তার সমস্ত দায়িত্ব আমরা নিয়া নিলাম। নিয়া এটাকে সামনে রেখে আমরা কাজ করলাম।
এই, এই, এই হল এই জায়গাটার একটা, মানে সরকারের বিরুদ্ধে একটা প্রটেক্ট। এই প্রটেক্টের জায়গাটা এই, এইখানে, এই যে, (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে)
এই যে, এই যে, এইখানে, ঐখানে ইসের দোকান ছিল। অর নাম কী যেন? রেস্টুরেন্ট ছিল?
তা. ই. মাসুম : মধু ?
কাজী গোলাম মাহবুব: ও হ্যাঁ, মধু। মধুর রেস্টুরেন্টেই বসত। এই সামনে তার পাশে এইখানে আম গাছ ছিল একটা। এই, এই, এইখানেই বসা, গল্পকরা, এইসব ছিল। তো মধুর এই জায়গায় এটা ঘটেছে। এবং শামসুল হক সাহেব আমি এরা ছিলাম। এই কমিটির পক্ষ থেকে। আমরা মোটামুটি এটাকে মানাইয়া নিছি, যাতে কোনো অঘটন না ঘটিয়া ভাষা আন্দোলনের উপরে একটা অসুবিধা কিছু হইয়া যায়। সুতরাং, আন্দোলনকে সামনে নেওয়ার জন্য তাদের, মানে ছাত্রদের যে চেতনা-চিন্তা, ছাত্রদের যে, তাদের মধ্যে যে, ভাবটা। সে ভাবটাকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে নিয়া আমরা এটার সঙ্গে আত্মস্থ হয়ে একসঙ্গে কাজ করেছি। ঠিক আছে না?
তা. ই. মাসুম: ঠিক আছে।
(এর পর গেলাম শহীদ মিনারের সামনে)
কাজী গোলাম মাহবুব: ঐখানে, মেডিকেল কলেজ হোস্টেল ছিল। এই জায়গাটায় শহীদ মিনার হইছে। কারণ ঐখানে যারা শহীদ হইছে, সেই জন্য এইখানে শহীদ মিনার করা হইছে। এবং আমাদের সৃষ্টিকে বহন করে আছে এই শহীদ মিনার। এই আন্দোলনটা ভাষা আন্দোলন, এই জাতির অস্তিত্বের আন্দোলন। যারা শহীদ হয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জন করছে তাদের উদ্দেশেই এইটা।
এইযে নিজের ভাষা তা দিয়া দেশের সমস্ত মানুষকে শিক্ষিত করা। এবং দেশের মানুষকে যদি সম্পদশালী করা যায়, তাহলে দেশ সম্পদশালী হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে এই যে যত আছে, এই শহীদ মিনারে দেখেন! (হাত দিয়ে দেখিয়ে) সব আনুষ্ঠানিকতা! এই শাড়ি পইর্যা, কাপর-চোপড় পইর্যা খালি বক্তৃতা দেওয়া। বক্তৃতা ছাড়া মানব কল্যাণে আর কোনো কাজ হয় না!
তা. ই. মাসুম: এদিক থেকে কোন রাস্তা দিয়ে জগন্নাথ হলে এসেম্বলিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন?
কাজী গোলাম মাহবুব: (আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে) এই তো এইখান দিয়ে শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে।
আমরা ঐখানে ছিলাম। (শহীদ মিনারের পেছনের জায়গা দেখিয়ে)
এই খানে। ঐ পাশ দিয়ে ছিলাম। যাইহোক, আমার সবচেয়ে দুঃখ লাগে, আমরা একটা বিশাল আন্দোলন গড়ে তুলছিলাম সমস্ত বাঙালীকে একত্রিত করে। ভাষা আন্দোলনে আমরা সার্থক হইছি। মানুষের মধ্যে একটা ভাল চেতনা, যেটা এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করছিল। এবং যার ফলে বহু প্রাপ্তি হইছে।
কিন্তু আমরা আমাদের প্রাপ্তিকে পুরো কাজে লাগাতে পারলাম না। রাজনীতিবিদদের মারামারির ফলে। হিংসা বিদ্বেষ। রাজনীতি যে মানুষের কল্যাণে, সেরকম কোনো প্রচেষ্টা নাই। গণতন্ত্র নাম আছে, কিন্তু প্রক্রিয়া আমাদের দেশে নাই। একজনে ক্ষমতায় গেলে আরেকজনে যে, কেমনে কইর্যা তারে নামাবে সেই চেষ্টা।এটাতো রাজনীতি না? এটা হল মানুষের মধ্যে প্রতিহিংসা তৈরি করে দেশটাকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাওয়া।
তা. ই. মাসুম: শহীদ মিনারে আর কী কী থাকতে পারে? কোন মানুষ (দেশী বিদেশী) যদি শহীদ মিনারে আসে, তারা যাতে এসেই ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারে এজন্য এখানে আর কী কী থাকা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?
কাজী গোলাম মাহবুব: আমার মনে হয়, এখানে একটা ঘর করে, একটা জাদুঘর করা উচিৎ। এই ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, ভাষা আন্দোলন করছে, আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জন করেছে। পৃথিবীর মানুষ জানতে চায়, যে ভাষার আন্দোলন দিয়ে এদের এত বড় প্রাপ্তি কী হল? এরা কী কী সফলতা লাভ করল?
তো এখন, আমি তো আর বলতে পারি না। তবে এরা যে এই, কতিপয় লোক যে, এটাকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে নিছে, এটাতো আমি বলতে পারি না।
সুতরাং এই জাতিকে, যদি তাদের এসব পরিবর্তন না হয়। যদি একাগ্র চিত্তে যারা যারা দায়িত্বশীল তারা একত্র হয়ে দেশকে ভালর দিকে না নেয়, তাহলে সম্ভব না। একে অপরের শত্রু। নানান রকমের রাজনীতি। এই যে, হাবিজাবি করতেছে। এতে মানুষের মধ্যে কোন প্রভাব পড়ছে না।
যে জাতি, যারা চিল্লায়! যারা কাজ করে? তারা কিন্তু চিল্লায় না। চিল্লানো, গপ্পো করানো, হাবিজাবি করানো। এজন্য এই রাজনীতিবিদদের এই বাংলাদেশ পরিহার না করলে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়া যদি এরা, রাজনীতিবিদরা না আসে তাহলে তো নামে গণতন্ত্র, বিকাশ সাধন করতে দেবে না। এটা তো হতে পারে না।
আামি বিশেষ করে আমার জীবনের এই ভাষা আন্দোলন যে, জেল জুলুম বহু কষ্ট হয়েছে, বহু আমরা খেটেছি, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। আমাদের অবদান আছে। আমাদের স্বীকৃতি সম্মান তো কিছু করে নাই।
এটাতে, এটা, এমনও, জাতীয় বীর যদি হয়, অন্যান্য দেশে, ইভেন আমেরিকায় বুশও তার বক্তৃতায় মার্টিন লুথার কিং এর, যারা ইয়ে করছে তাদের বিভিন্ন লোকে যে অবদান রাখছে সমস্ত লোকের স্টেট সম্মান দিছে।
কিন্তু আমাদের দেশে সে সম্মান নাই।
জাতির ইতিহাসে, যাদের অবদান আছে। তাদের জাতীয় বীর হিসাবে রাখলে তার কোন লাভ হবে না! তার তো যা আছে, আছেই! জাতি উপকৃত হবে। মানুষে প্রেরণা পাবে ভাল কাজ করার।
তো যাই হোক যারা, আসল যারা আছে। তাদের বয়স, মৃত্যুপথযাত্রী। এই সমস্ত ন্যাশনাল বীর যারা আছে। তাদেরকে একত্র করে মানুষকে দেখালে মানুষ প্রেরণা পাবে। অনেকে অনেক রকম আছে। আমাদের দেশে যারা বিভিন্ন দল আছে, তারা নিজেদের প্রচার করার জন্য বেশি রকম ব্যস্ত।
কিন্তু আমি তো, আই ওয়াজ দি কনভেনার। আমার হাতের বাদ দিয়া কেউ যাইতে পারবে না। আমি জানি তো, কে কী করছে? সুতরাং আমার একটা এভিডেন্স উইল বি ভেরি গুড এভিডেন্স। সাক্ষী! আমি ভাল সাক্ষী দিতে পারব।
সেই জন্য আমার কথাটা হচ্ছে যে, আজকে আমাদেরকে সম্মান যদি দেখায়। আমাদের যদি ভালভাবে উপস্থাপন করে জাতীয় বীর হিসাবে। তাইলে আমরা সম্মানিত যেটা আছি তো আছিই? মইর্যা তো গেছে প্রায়ই! কিন্তু দেশ উপকৃত হবে।
আজকে কী হচ্ছে? যে যত খারাপ করতে পারতেছে মানুষের, সেই সবচেয়ে সম্মানিত হইতেছে।
গুণ্ডা -ফুণ্ডায় দেশ একদম ছয়লাব হইয়া গেছে। মানুষ তো, মানুষের কোনোপ্রাপ্তি নেই।
তো সুতরাং, আজকে, আজকে দেশ বাঁচান। মানুষ বাঁচান। এই দেশটা একটা ধ্বংসের পথে রওয়ানা হচ্ছে। একে বাঁচাতে হলে, একমাত্র সমস্ত মানুষকে একত্রিত হয়ে যাতে একটা সফলভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, এই দেশ ভাল করে চালু হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
তো সুতরাং, আমি আজকে এই ফেব্রুয়ারি মাসে, তাদের কাছে আবেদন জানাব যে, দেশকে সম্পদশালী করেন। দেশকে বাঁচান! রাজনীতি দেশে থাকবেই। এরচেয়েও খারাপ রাজনীতি হবে, মারামারি-কিলাকিলি হবে।
এটাতো এই পথই। কিন্তু মানব কল্যাণে আপনারা সব একত্র হয়ে দেশকে বাঁচান। মানুষকে বাঁচান! মানুষকে সম্পদশালী করেন! এই হল আমার আবেদন।
চলবে…