ব্রিস্টল থেকে: সাফল্য না এলে দলের ভেতরে এমনিতেই চাপ থাকে। বাইরের আলোচনা সেটিকে ক্রমেই বাড়িয়ে দেয়। সমালোচকদের বাঁকা কথা কখনও কখনও পৌঁছে যায় খেলোয়াড়দের কানেও। যার প্রভাব পড়ে ড্রেসিংরুমে। তাতে কক্ষপথে ফেরার চ্যালেঞ্জ হয়ে যায় আরও কঠিন!
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে বাইরের আলোচনা থেকে ক্রিকেটারদের দূরে রাখা। পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের মধ্যে সাকিব ছাড়া আর কেউই নেই ফর্মে। ওপেনার তামিম রান পাননি তিন ম্যাচে। ভালো বোলিং করতে পারছেন না মাশরাফী। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহও রাখতে পারেননি সক্ষমতার ছাপ। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্রিস্টলে খেলতে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে কথায় কথায় মাশরাফী বুঝিয়ে দিলেন, সমর্থকদের কাছে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আশা করছেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক।
‘আমি সবকিছু ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে চাচ্ছি। আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেটাররা সবাই মানসিকভাবে ঠিক আছে। স্রেফ বাইরের আলোচনা যাতে ড্রেসিংরুমে না যায়, সেটা আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই তো অনেক ইমোশনাল, ক্রিকেটার এবং তার বাইরের সবাই। রাতারাতি চাওয়া-পাওয়া পছন্দ করি।’
‘এটা খেলোয়াড়দের মধ্যেও আছে, প্রত্যেকটা ম্যাচেই ভালো খেলতে হবে, প্রত্যেকটা ম্যাচেই ভালো চাইতে হবে, এমন। রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) যেভাবে ব্যাটিং করে সেভাবেই প্রতি ম্যাচে করতে হবে, তামিম কেনো প্রতি ম্যাচে ১০০ মারে না। তামিমও কিন্তু সেই (সেঞ্চুরির) প্রত্যাশা নিয়েই ক্রিজে যায়। জাতি হিসেবে তো আমরা সবাই এরকম (প্রত্যাশার পাহাড়)। এই ধারাটা যেন ড্রেসিংরুমে না যায়। যেভাবেই পড়ুক ওই চাপটা কিন্তু পড়ে। তাই ওটা থেকে যতদূরে থাকতে পারবে, আমার মনে হয় ততবেশি স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে পারবে।’
প্রত্যাশিত বোলিং করতে না পারায় সমালোচিত হচ্ছেন মাশরাফী নিজেও। ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডের সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো সে প্রসঙ্গও। ১০ ওভারের কোটা কেনো শেষ করছেন না সেটি জানতে চাইলেন এক বিদেশি সাংবাদিক। জবাবদিহিতার জায়গা থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন অধিনায়ক।
‘আপনি যখন পেশাদার জীবনে থাকবেন, যখন সেরাটা দিতে পারবেন না, প্রশ্ন উঠবে। খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা মেনেও নিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় প্রথম দুই ম্যাচে উইকেটে যেমন ছিল বেশিরভাগ পেসারদের ইকোনমি ৬, সাড়ে ৬ হয়ে যাচ্ছিল। ওখানে যদি স্পিনারদের দিয়ে কাজ হয় তবে তাদের বেশি ব্যবহার করতেই হবে। গত ম্যাচে আমার ১০ ওভার করা প্রয়োজন ছিল, করেছি। ৮-৯ ওভার পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক হয়েছিল। ভালো সময়-খারাপ সময় থাকে।’
‘নিজের কাছে আমি আরও বেশি প্রত্যাশা করি। ম্যাচ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চাই। সেটি না হলে নিজেই নিজের কাছে প্রশ্ন করি। মানুষ কে কী বলল, সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমি নিজে কী অনুভব করছি। সেরাটা না দিতে পারলে মানুষের চেয়ে নিজেরই বেশি খারাপ লাগে।’