প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্প পদ্মাসেতু নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাবাসীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে। যারা বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তারা দেখবেন, আমরা পদ্মাসেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় বিশ্ববাসী এখন বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখতে শুরু করেছে।’
কম্বোডিয়ার হোটেল সোফিটেলে এক নৈশভোজে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে কম্বোডিয়ার অ্যাক্রিডেটেড সাইদা মুনা তাসনিম প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে এ নৈশভোজের আয়োজন করেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: এটা বাস্তব যে, সকলেই এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে সমীহ করে কথা বলেন। বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় মাথা উঁচু করে চলবে।
‘পদ্মাসেতু নির্মাণটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ এবং অনেকেরই এমন ধারণা ছিল বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া আমরা এটা নির্মাণ করতে পারবো না। কিন্তু আমি বলেছি আমরা পারবো এবং আমরা করে দেখাবো। আমরা মিথ্যা অভিযোগ কেন মাথা পেতে নেব। এটা সত্য যে এর ফলে আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে তা স্বত্বেও আমরা চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেছি।’
পদ্মাসেতুর মত মেগা প্রজেক্টও বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমরা আমাদের নিজস্ব সামগ্রী- বিশেষ করে আমাদের সিমেন্ট এবং স্টীল দিয়ে ব্রীজটি নির্মাণ করছি।
বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে নানাদিকে সাদৃশ্য রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারিত হবে।
এই দুটি দেশই এক সময় গণহত্যার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: দুটি দেশের জনগণকেই সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। বর্তমানে কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রীও অনেক যন্ত্রণা এবং সঙ্কটের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করেছেন।
কম্বোডিয়ায় পৌঁছানোর পরও তিনি বাংলাদেশেই রয়েছেন এমন অভিমত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: এটি খুব সুন্দর দেশ। আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
‘সরকার পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যাতে এই দেশকে আর কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয়। সরকারের মূল লক্ষ্যই হলো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উত্তরণ ঘটানো, দারিদ্র বিমোচন, মানুষকে উন্নত জীবন দেয়া এবং গ্রামীণ জনতার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো।’
তিনি এসময় দেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশের রপ্তানী জোরদার করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন এবং বিদেশিদের সরাসরি বিনিয়োগের জন্য সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাগুলোও তুলে ধরেন।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের ওয়ার্ল্ড মেমোরি রেজিষ্টারে অর্ন্তভূক্ত করায় জাতি হিসেবেও আমরা সম্মানিত হয়েছি বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বেসমরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।