প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অমিত সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ, বিশ্বের বুকে একটি গতিশীল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার ক্ষমতা আমাদের আছে। বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম অায়ের দেশে উন্নীত করতে চাই। এই উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে সহযোগিতা চান সহযোগীদেরও।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বড় চ্যালেঞ্জ অর্থ যোগান দেয়া উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্রের হার নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্রের হার ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে কাজ করতে হবে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে বলেন: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৩ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহৃত হচ্ছে। ৮ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মাথাপিছু আয় উন্নীত হয়েছে। ১৬৩৫০ মেগাওয়াটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, এ বছরের মার্চের মধ্যেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে ব্যাক্তিগত অংশগ্রহণ জরুরি মনে হওয়ায় সরকার বর্তমানে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। একই সঙ্গে জলবায়ু সহিষ্ণু খাদ্য উৎপাদনে গবেষণা করে সফল হয়েছি।’
এ সময় সপ্তম বার্ষিক পরিকল্পনায় নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।
উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাশে থাকা সহযোগীদের সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং কৌশলগত সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের আয়োজন। উন্নয়ন অংশীদারিত্ব শিরোনামে শুরু হওয়া দু’দিনের এ ফোরামে অংশ নিচ্ছেন দেশি-বিদেশি অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক-গবেষক এবং উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে ফোরামের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)’র মহাপরিচালক সুলেইমান জাসির আল-হার্বিশ, বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট অ্যানিত্তি ডিক্সন, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস-প্রেসিডেন্ট ওয়েনসাই জাং, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাপরিচালক মিনোরু মাসুজিমা এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।