১. তাসকিনের গ্ল্যামারটাও একটা ফ্যাক্টর। এমন ফটোজেনিক ফেসকে ইন্ডিয়ান মিডিয়া ঈর্ষা করবেই! বিরাট কোহলির গ্ল্যামার বেঁচে তরতাজা ইন্ডিয়ান বিজ্ঞাপনী বাজার এই ফর্সা রঙটাকে ভালো চোখে দেখছে না। তাসকিন আসলে বর্ণবাদের শিকার। তবে তার পাশে ‘ফেয়ার এন্ড লাভলি ফাউন্ডেশন’ ঠিকই দাঁড়িয়ে যাবে। এভাবেই বহুজাতিক বিজ্ঞাপনী বাজারে ইন্ডিয়ান আধিপত্যে ভাগ বসাবে বাংলাদেশ। তামিম যেহেতু ম্যাগনেট অ্যাকশনে ভাগ বসিয়েছে, আগেভাগেই তাসকিনের অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হল।
২. ইমরান, ওয়াসিম আকরাম অথবা আজহার উদ্দিন, শচীনরা বাংলাদেশে যেমন জনপ্রিয় তেমনই ইন্ডিয়া-পাকিস্তানে সাকিব-মুশফিকরাও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তবে এই দৌড়ে মাশরাফি পিছিয়ে। ক্যাপ্টেনের ‘ন্যাশনালিজম’ তাকে বাংলাদেশের বাইরে খুব একটা জনপ্রিয় করতে পারেনি। গাভাস্কারও আম-ইন্ডিয়ান দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই মাশরাফিকে মেপেছেন।
৩. ধারাভাষ্য থেকে শুরু করে ম্যাচ রেফারি অথবা সম্প্রচারকর্মী; মাঠের বাইরে-ভেতরে স্পোর্টস সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ ভালোভাবে মেনে নিতে পারছে না ইন্ডিয়া বা পাকিস্তান। খেলা সম্প্রচারে স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে ভাগ বসিয়েছে জিটিভি-মাছরাঙা। বিটিভিতো আছেই!
৪. শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাস থেকে কোট:
‘ইস্কুলের মাঠে বাঙ্গালী ও মুসলমান ছাত্রদের ফুটবল ম্যাচ।’
ইডেনের মাঠে সেই তথাকথিত বাঙালির পূর্ব ও পশ্চিমের দুই মুসলমান দল নেমেছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে মুসলমানরা বাঙালিদের ভাষায় কথা বলে, তাদের সাপোর্ট না দিয়ে কলকাতা গাইলো ‘দিল দিল পাকিস্তান!’ স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে আফ্রিদির মুখ! বাংলাদেশ কী এমন করলো, যাতে কারগিল যুদ্ধও ভুলে গেলো কলকাতা! ভুলে গেলো ২০০৮-এর মুম্বাই হামলাও! ধর্মশালা ভোলেনি। ইন্ডিয়ার এক প্রান্ত যখন পাকিস্তান টিমের নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করছে, অন্যপ্রান্তে তখন স্টেডিয়ামজুড়ে একখণ্ড পাকিস্তান।
সাম্প্রদায়িক উসকানি জাগানিয়া কবীর সুমনের সাম্প্রতিক মুসলিমপ্রীতি কী এতে ফ্যাক্টর, নাকি মমতার সংখ্যালঘু রাজনীতি? উপমহাদেশীয় ক্রিকেট রাজনীতিতে এটা একটা নতুন মোড়! বাংলাদেশ ইস্যুতে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান এক হয়ে যায়!
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)