চট্টগ্রাম থেকে: মিরপুরে গত দুই বছরে স্পিনফাঁদ পেতেই বড় দুই শিকার ধরেছিল বাংলাদেশ। দল দুটি ছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। চট্টগ্রামেও পাতা হল তেমন ফাঁদ। এবার ধরাশায়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টাইগারদের প্রথম টেস্ট জয়টি ৬৪ রানের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ-৩২৪ ও ১২৫, উইন্ডিজ-২৪৬ ও ১৩৯
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের উইকেটে সাপের মতো ফণা পাকিয়ে ছোবল দিচ্ছিল সাকিব-মিরাজ-তাইজুলদের বল। সাকিব-তাইজুলের জোড়া আঘাতে ১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০৪ রানের লক্ষ্যটা তখনই হয়ে যায় পাহাড়সম।
সাগরিকার ২২ গজে টিকে থাকা কঠিন বলেই কিনা বিরতির পরের ওভারে সাকিবকে টানা দুই চার ও এক ছক্কা মেরে আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখান হেটমায়ার। মিরাজের বলে এ বাঁহাতির ১৯ বলে ২৭ রানের প্রতিরোধ গড়া ইনিংসটি থামার পর তাইজুলের স্পিন ভেলকি ডানা মেলে।
বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ৬ উইকেট শিকার করে তৃতীয় দিনের চা-বিরতির আগেই ক্যারিবীয়দের গুটিয়ে দিয়েছেন ১৩৯ রানে।
সকালে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখায় উইকেট। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে ঘূর্ণি, বাউন্স। হতে থাকে মন্থর। তাতে ব্যাটসম্যানদের চাপ দ্বিগুণ হয়। ৫ উইকেটে ৫৫ থেকে বাংলাদেশের ইনিংসে শনিবার যোগ হয় আরও ৭০ রান। প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানের লিড যোগ হয়ে স্বাগতিকদের পুঁজি দাঁড়ায় ২০৩ রানের।
লক্ষ্যটা সফরকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। শুরুতেই কাইরেন পাওয়ালকে (০) ফিরিয়ে টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০ উইকেট শিকারের উদযাপন সারেন সাকিব। ডাবলের রেকর্ডে ছাড়িয়ে যান ইয়ান বোথামকে। বল হাতে উইকেটের ডাবল সেঞ্চুরি ও তিন হাজার রান সংগ্রহে সবচেয়ে কম ম্যাচ (৫৪) খেলা ক্রিকেটার এখন সাকিব। ইংলিশ অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামের লেগেছিল ৫৫ ম্যাচ।
দলীয় ১১ রানের মাথায় সাকিব হানেন দ্বিতীয় আঘাত। শাই হোপকে (৩) উইকেটরক্ষক মুশফিকুরের গ্লাভসে ক্যাচ বানান এ বাঁহাতি স্পিনার। পরের ওভারে তাইজুল বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন ব্র্যাথওয়েটকে (৮)। পঞ্চম বলে ফেরান চেসকে (০)। শূন্য রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় উইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ শুরু করেছিল ৪৩ রানে অলআউট হয়ে। বিরতির আগে যেভাবে উইকেট পড়ছিল তখনই উঁকি দেয় প্রতিশোধের সম্ভাবনা। বিরতির পর সাকিবের এক ওভারে ১৭ রান তুলে সে আশা ভেঙে দেন হেটমায়ার।
৭৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগে উন্ডিজের। তবে নবম উইকেট জুটিতে ওয়ারিকেন ও আমব্রিস মিলে ৬৩ রান যোগ করে অপেক্ষা বাড়ান। ৪১ রানের ইনিংস খেলা ওয়ারিকেন মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হলে ভাঙে জুটি। আর ১ রান যোগ হতেই আমব্রিসকে (৪৩) মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে জয়োৎসবে মাতেন তাইজুল।
৩৩ রানে ৬ উইকেট শিকার করে চলতি বছর সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় চতুর্থ নম্বরে উঠে এসেছেন এ বাঁহাতি স্পিনার। শীর্ষে থাকা কাগিসো রাবাদা ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৬ উইকেট। সেখানে ৬ ম্যাচে তাইজুলের উইকেট ৪০টি।