সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দুই মেয়াদে ১০ বছরের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ: অগ্রগতি ও উন্নয়নের দশ বছর’।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং এর উদ্যোগে জিনিয়াস পাবলিকেসন্স থেকে সংকলনটি প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশঃ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দশ বছর -এই সংকলনটি বিভিন্ন মন্ত্রণলায় ও বিভাগ হতে প্রাপ্ত তথ্য, উপাত্তের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিমের সম্পাদনায়, প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্তি প্রেস সচিব নজরুল ইসলামের গ্রন্থনা ও সম্পাদনা সংকলনটি প্রকাশ করা হয়। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব মামুন অর রশিদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারি প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু। সংকলনটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা।
সংকলনটিতে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।তার মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২০,৪৩০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ; জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ৭.৮৬ শতাংশে উন্নীতকরণ; ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি; প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন; মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ; কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা; বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান; চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কম্যুনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন; দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ সালের ৪১.৫ থেকে ২০১৭-২০১৮ বছরে ২১ শতাংশে হ্রাস; ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়; মাথাপিছু আয় ১,৭৫১ ডলারে উন্নীতকরণ, ইত্যাদি।
শেখ হাসিনার সরকারের দশ বছরে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দ্বিপাক্ষিক ফোরামে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়নসহ ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বাংলাদেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ, এমডিজি ও সাউথ-সাউথ পুরস্কার, ইউনেস্কো কর্তৃক “শান্তিবৃক্ষ”, এজেন্ট অব চেঞ্জ, প্লানেট ৫০-৫০, গ্লোবাল উইমেন লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড, আপিএস-এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ বহুসংখ্যক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
ঈশ্বরদীতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন পারমাণবিক ক্লাবের সদস্য। একইভাবে মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা-সংবলিত নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আমরা হয়েছি এলিট স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য। যে কোন মেগাসিটির জন্য মেট্রোরেল একটি অতি প্রয়োজনীয় বাহন এবং আভিজাত্যের প্রতীক।
রাজধানী ঢাকায় স্বপ্নের মেট্রোরেলের কাজ এগিয়ে চলছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ অর্ধেকেরও বেশি শেষ হয়েছে।
শেষ হাসিনার সরকার কঠোরভাবে জঙ্গিবাদ দমন করেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করা ছাড়াও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। এরফলে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মুল হতে চলেছে।
বর্তমান সরকারের আরেকটি বড় সাফল্য হ’ল বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার বিচার করেছে এই সরকার।
২০০৯ সালের ৯ই জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন জাতীয় সংসদে পাশ হয়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫-এ মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।এর মধ্যমে আপীল বিভাগে ৭টি মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এখনও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ১৯টির বেশি মামলা। সাতটি রায়ের মধ্যে ৬টিতে ফাঁসির আদেশ হয় কার্যকর করেছে সরকার।
সংকলনটিতে ২০১৮ সালে তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘ-মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্লান ২১০০’ কেমন হবে তা এই পরিকল্পনায় তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এসব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়নের অনেক আগেই ২০২১ সালের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষতার অন্ধকার দূর হবে, মা ও শিশুমৃত্যুর হার উন্নত দেশগুলোর সমপর্যায়ে আসবে, কোন মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না, বেকারত্ব হ্রাস পাবে, দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশের নীচে নেমে আসবে। বাংলাদেশের মানুষ পাবে এক উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনের স্বাদ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।