নিধাস ট্রফিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে অনেকদিন পর ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তবে ভারতের কাছে দুটি ম্যাচেই হেরেছে টাইগাররা। রোহিতের দলের বিপক্ষে বুধবারের হারের পর এখন বাঁচা-মরার ম্যাচের সামনে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহরা। লিগের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই।
মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন চোট কাটিয়ে ওঠা সাকিব আল হাসান। খেলার সম্ভাবনাও আছে তার। অঘোষিত সেমিফাইনালে সাকিবের সংযুক্তিকে লঙ্কান কোচ হাথুরুসিংহে দেখছেন বাংলাদেশের দলের ‘ভাল’ হিসাবে। আর টাইগারদের কোচ ওয়ালশ বলছেন, সাকিব থাকলে দল অনুপ্রেরণা পাবে।
শুক্রবার ‘নিধাস ট্রফির’ ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। প্রেমাদাসা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটি। দুদলের ঝুলিতেই সমান দুটি করে পয়েন্ট। ভারত আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। লঙ্কানদের জয়টি ভারতের বিপক্ষে। আর টাইগাররা জিতেছিল শ্রীলঙ্কার দেয়া ২১৪ তাড়া করে।
শুক্রবারের ম্যাচের আগে দু’দলই বলেছে, টি-টুয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব বেশি। সেখানে যারা সফল হবে তারাই রোববারের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নামবে।
আঙুলের ইনজুরির কারণে বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে আছেন সাকিব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে অংশ নেয়ার জন্যে বৃহস্পতিবার লঙ্কায় উড়ে গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এদিন বিকেলে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবার তার নেতৃত্বেই মাঠে নামতে পারেন মুশফিক-তামিমরা।
সাকিবের দলে যোগ দেয়া বাংলাদেশের জন্য ‘বাড়তি শক্তি’। শ্রীলঙ্কার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও তেমনটাই বলেছেন, ‘সাকিবের দলে যোগ দেয়াটা বাংলাদেশ দলের জন্য ভাল হবে, তবে আমাদের আলাদা কোন পরিকল্পনা নেই।’
‘আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলবো। যদি হেরে যাই, সেটা নিয়ে সিরিজের পরে আলোচনা করবো আমরা।’ শিষ্যদের নির্ভার থাকার মন্ত্র এভাবেই দিচ্ছেন হাথুরু।
দলের সঙ্গে টি-টুয়েন্টির নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব যোগ দেয়ায় বাড়তি প্রেরণা পাবে টাইগারবাহিনী। সাজঘরে থাকবে বাড়তি আত্মবিশ্বাসের ছটা। কোচ কোর্টনি ওয়ালশের কথায় উঠে এল সেটিই, ‘সাকিব অবশ্যই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ও থাকলে দলের অন্যরাও অনুপ্রেরণা পাবে।’
‘সাকিব যদি পুরোপুরি ফিট থাকে তবেই সে খেলতে পারবে। এক্ষেত্রে কোন বাধা নেই।’ সাকিবের খেলা না খেলার প্রশ্নে অপেক্ষায় রাখা উত্তর ওয়ালশের।
গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে দলের পরিকল্পনা নিয়ে ওয়ালশ বললেন, ‘দলের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি ভাল হবে, সেভাবেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এটা আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার অভ্যাসটা আমাদের করতে হবে।’
শেষ দুই ম্যাচে মুশফিকের ব্যাট থেকে বড় ইনিংস পেয়েছে বাংলাদেশ। দু’দলের কোচই বলেছেন, টি-টুয়েন্টিতে জিততে হলে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিতে হবে। মুশফিকের মত বড় ইনিংস প্রত্যাশা থাকবে অন্যদের থেকেও। তবে বোলারদের কাজটা ঠিকঠাক করতে হবে।
বাংলাদেশ কোচের ভাষায়, ‘মোস্তাফিজ, রুবেলরা বোলার হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করার কিছু নেই। কারণ টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বটাই গুরুত্বপূর্ণ। মুশফিক ভাল অবস্থানে আছে। ও রানও পাচ্ছে। তবে শুধুমাত্র একজনকে দিয়ে ম্যাচ জয় সম্ভব নয়। টপ অর্ডারদেরও রান করতে হবে।’
সেখানে হাথুরুসিংহের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেদিন দারুণ খেলেছে। আর এজন্যই তারা জিতেছে। আমরা ভাল বোলিং করিনি। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে।’
স্বাধীনতার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত শিরোপাটা নিজেদের ঘরেই রাখতে চায় শ্রীলঙ্কা। তবে বাংলাদেশের চোখে আপাতত শুধুই ১৮ মার্চের ফাইনালের টিকিট কাটা।