চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বশেমুরবিপ্রবি’র সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির পদত্যাগ করেছেন।

শনিবার দুপুরে পদত্যাগ করেন সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির।

এর আগে উপাচার্যের গুণ্ডাবাহিনীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নারী শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করে। এরমধ্যে গুরুতর আহতদের মধ্যে ৩ জনকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির বলেন: আমার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি। আমি আমার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি, তাই নৈতিক জায়গা থেকে পদত্যাগ করেছি।

তিনি বলেন: বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সরাসরি পদত্যাগপত্র জমা দিতে না পারলেও মৌখিকভাবে বিষয়টি রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবিরের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুরউদ্দিন আহমেদ বলেন: পদত্যাগপত্র এখনো জমা দেননি সহকারী প্রক্টর। তাহলে তিনি কীভাবে পদত্যাগ করলেন? হুমায়ুন কবির পদত্যাগ করতে চাইলে করতে পারেন। এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উপাচার্যের ভাড়া করা সন্ত্রাসী ও গুণ্ডাবাহিনী ওই হামলা করেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর (সার্কেল) মো, ছানোয়ার হোসেন হামলার ঘটনার  বিষয়টি তিনি জানেন না।

অন্যদিকে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রোববার থেকে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ  ঘোষণা করে আজ সকাল ১০টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ, এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

ভিসির পিএস, সেকশন অফিসার ইমরুল হাসান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন: ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুটি গ্রুপের মধ্যে কোনো একটি গ্রুপ এ ঘটনা ঘটিয়ে ভিসি স্যারের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পিআরও মো, মাহাবুল আলম অস্বীকার করে বলেন: গত কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ভিসির পদত্যাগের দাবিতে মিছিল-মিটিং-সমাবেশ-মশাল মিছিলসহ ভিসি স্যারের সম্পর্কে নানান ধরনের নোংরা ভাষা ব্যবহার করে ক্যাম্পাসের ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছিলেন। বিরাজমান পরিস্থিতি নিরসন ও শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। এমন ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভিসি স্যারকে নিয়ে মিথ্যা-বানোয়াট- ভিত্তিহীন ও আপত্তিকর বেশ কিছু কথা বলে নানান প্রকার শ্লোগান দিতে থাকেন। বিষয়টি একদল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে উভয়ের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কেউ হল ত্যাগ করেননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত ছয় মাসে সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে শিক্ষকদের নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ায় আইন বিভাগের ছাত্রী ও সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকেও বহিষ্কার করা হয়।

এ ঘটনার পর জিনিয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলন শুরু করেন। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে গত বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর ওইদিন রাত থেকে ভিসি খন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।