নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির ৫ জন সদস্যের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় দলের মহাসচিব বলেছেন, সরকারদলীয় মানসিকতার মানুষদের সমন্বয়ে গঠিত সার্চ কমিটিকে নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ বিবেচনা করার অবকাশ নেই। যে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
আজ (শুক্রবার) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ঘোষিত সার্চ কমিটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।এই কমিটিতে ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছাপূরণে সহযোগিতা করতে আওয়ামী পরিবারের বিস্বস্ত সদস্যদের অন্তর্ভূক্ত করে সার্চ কমিটিকে শুধু বিতর্কিতই করা হয়নি, এর মাধ্যমে জনমতকে অগ্রাহ্য করার আরেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। ”
ঘোষিত সার্চ কমিটির সদস্যদের পরিচয় তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কিমিটির প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের যে বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তিনি ২০১২ সালে গঠিত সার্চ কমিটির প্রধান ছিলেন। সে কমিটির প্রস্তাবক্রমে রকিব উদ্দীন কমিশনের মতো একটি অযোগ্য অনুগত মেরুদণ্ডহীন বিতর্তিত কমিশন নিযুক্ত হয়। কমিটির অন্যতম সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী হিসেবে বহুল পরিচিত ছিলেন। অপর সদস্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মহাবিতর্কিত সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি ছিলেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব। কমিটির একমাত্র নারী সদস্য ড. শিরীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকনেত্রী হিসেবে ২০১৪ সালে শিক্ষক সমিতির নেতা ছিলেন। কমিটির অপর সদস্য বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সরকারের অধীনস্থ একজন কর্মকর্তা হয়ে তিনি সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধ কোন কিছু করার ক্ষমতা রাখেন না। এমন সব ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সার্চ কমিটিকে নির্দলীয় কিংবা নিরপেক্ষ বিবেচনা করার কোন অবকাশ নেই। ”
কমিটির সদস্য- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম সম্পর্কে কোন আপত্তি জানায়নি বিএনপি। তবে, তারা বলছে, ঘোষিত সার্চ কমিটি দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের আশা করাটাও বাতুলতা।
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদের নির্দেশে বুধবার ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি কমিটিকে স্বাগত জানালেও বিচ্ছিন্নভাবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা।