টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বেশ কয়েকটি জেলায় পানি বেড়েছে। এরই মধ্যে কয়েক জেলার নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী ও হাটহাজারীসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাঙ্গু ও হালদা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন, নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে নদী পাড়ের স্থাপনা। সড়কের উপর পানি বাড়ায় বন্ধ আছে অধিকাংশ যানবাহন চলাচল। অন্যদিকে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রায় একই অবস্থা রংপুরেও। সেখানে তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছার হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু নিয়ে তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।
এছাড়া গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদীর পানি বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, গাইবান্ধা সদর এবং ফুলছড়ির নদী তীরবর্তী এলাকায় নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে।
লালমনিরহাটে প্রধান দুই নদী তিস্তা ও ধরলার পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবার।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার এবং ছাতকএ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষজন। জেলার বেশিরভাগ উপজেলার রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মসজিদ-মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়েছে।
একই ধারাবাহিকতায় কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সেখানে পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২০টি গ্রামের ১০ হাজার মানুষ।
এসব এলাকায় নিরাপদ পানি ও খাদ্য সংকট সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন বন্যা দুর্গতের সহায়তা দেয়ার কথা জানালেও দুর্গতরা বলছেন, তারা এখনো কিছুই পাননি। তাই এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত মনোযোগী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি বলেন: দুর্যোগ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সবার দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া আছে। তারা দুর্যোগ মোকাবেলা করবে। সেই সাথে দলীয় কর্মীরাও দুর্যোগ মোকাবেলায় নিয়োজিত।
এছাড়াও ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করি। তাই সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দুর্গতদের সার্বিক সহায়তায় এগিয়ে আসতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।