চলতি মাসে দেশে একটি মাঝারি বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী ওই বন্যায় দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের অন্তত ১০ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। শুধু তাই নয়, পরের মাস মানে অাগস্টেও আরো দুটি বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার নদ-নদীর সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুরে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। বন্যা নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, কয়েকটি নদীতে পানি বাড়ায় তিস্তা অববাহিকার নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও দিনাজপুরের নিম্নাঞ্চল এবং গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।
দেশের পূর্বাঞ্চলের উজানে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ অাশে পাশের কয়েকটি জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।
বন্যা নিয়ে এসব পূর্বাভাসের নিশ্চিত মানে দাঁড়ায় আগামী দুই মাসে কয়েকটি জেলায় একাধিক বন্যা হচ্ছেই। সেই বন্যা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি কী? বিশেষ করে মানুষ, গবাদিপশু এবং ফসলের আবাদ নিয়ে এখন থেকেই বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে কি?
আমরা আগেও বারবার দেখেছি, বন্যার সঠিক এবং স্পষ্ট পূর্বাভাস থাকার পরও পূর্বপ্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যে কারণে মানুষকে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। যে ক্ষয়-ক্ষতি শেষ পর্যন্ত অনেকের পক্ষে আর পূরণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
সবাই জানার পরও বন্যার্তদের জন্য প্রাথমিক অবস্থা যে সাহায্যগুলো দরকার, তা সরবরাহ করতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। আমাদের দেশে বন্যায় এমন চিত্র খুবই পুরনো। এমনকি শেষ পর্যন্ত দেখা যায় বন্যা শেষ হয়ে যাওয়ার পর সাহায্য আসছে যখন তা অপ্রয়োজনীয়।
তাই এমন পরিস্থিতি এড়াতে সবার আগে প্রয়োজন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আগে থেকেই বন্যাকবলিত সুনির্দিষ্ট এলাকা ও জনসংখ্যার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সমন্বিত প্রস্তুতি নেয়া। না হলে আসন্ন বন্যাতেও সেই পুরনো পরিস্থিতিই আমাদেরকে দেখতে হবে।