সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৫টি উপজেলা বন্যাকবলিত হওয়ার পর পদ্মা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। নদীবহুল ও উজানের দেশ বলে বাংলাদেশে পাহাড়ি ঢলের পানির কারণে বন্যা এখন প্রতি বছরই হয়। বন্যা নিয়ে সরকারের এখনই সতর্ক হওয়ার দরকার। উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকাও বন্যা কবলিত হচ্ছে নতুন করে।
সংবাদে জানা যায়: সুনামগঞ্জে অব্যাহত বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী ৫টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে শান্তিগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা ও জগন্নাথপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে। বন্যার পানিতে সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকায় অবস্থিত সিটি করপোরেশনের পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট তলিয়ে গেছে। ফলে প্লান্টটি থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি চারটি পাম্পও তলিয়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় নগরে কয়েকটি এলাকার পানিবন্দী মানুষ সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। নগরের কলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রমিজ উদ্দিনের বাড়ির টিউবওয়েলটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। রমিজ উদ্দিন বলেন: খাবার পানির জন্য বৃষ্টির পানি ধরে রেখেছিলেন। সেগুলো কাপড়ে ছেঁকে পাত্রে রাখছেন। এরপর সেই পানি ফিটকিরি দিয়ে বিশুদ্ধ করে পান করবেন। নগরের মণিপুরি রাজবাড়ী এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ কুমার শীল বলেন: গত মঙ্গলবার থেকে পানিবন্দী। পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ময়লা পানি মাড়িয়ে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের জন্য প্রতিবেশীর বাড়িতে যেতে হয়। সিটি করপোরেশন পানি সরবরাহ করলেও যে সংগ্রহ করতে পারবেন, এমন পরিস্থিতি নেই। কারণ, পানির রিজার্ভ ট্যাংক বন্যার পানির নিচে রয়েছে। সেটি চালু করলে ময়লা পানি প্রবেশ করবে। একই এলাকার বাসিন্দা সুদিপ্ত দেব বলেন: ঘরের ভেতরে পানি। এর মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি ব্যবহার্য পানির ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এখন পানি কমার জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না পানিবন্দি মানুষেরা। এখন পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য ১৫ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরকারকে বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ জরুরি খাদ্য সরবরাহ উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সারাদেশে বন্যার ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলগুলোকে দ্রুত দুর্যোগ ব্যবস্থার আওতায় এনে এখনই বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া। যাতে হঠাৎ বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে না পড়ে।