সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কক্সবাজারে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে মা-শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভোলা ও লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে যাত্রীবাহি লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। নৌ বন্দরগুলোকে ২ নম্বর এবং সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ভারি বর্ষণ, পাহাড়ী ঢল আর জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার আবারো বন্যার কবলে পড়েছে। জেলা সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়াসহ আট উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় দু’শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ৩টি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৭ লাখ মানুষ।
চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীতে ভেসে গিয়ে ২ শিশু নিখোঁজ রয়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুতের খুটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরার ট্রলারগুলো নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
বন্যার সঙ্গে অব্যাহত রয়েছে পাহাড় ধস। কক্সবাজারের দক্ষিণ বাহারছড়ার রাডার ষ্টেশন এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে মা ও শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে । এখনো নিখোঁজ রয়েছে ১ জন। সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
চার দিনের টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানের প্রধান সড়ক প্লাবিত হওয়ায় তৃতীয় দিনের মতো বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এছাড়াও জেলার বালাঘাটা, কলাঘাট, পর্যটন স্পট নীলাচল, স্বর্ণ মন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস অব্যাহত রয়েছে।রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলা সড়কে পাহাড় ধসে রাস্তায় মাটি পড়ায় বান্দরবান সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বৈরী আবহাওয়ায় ভোলা লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মেঘনার উত্তাল স্রোতো-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কসহ ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অবিরাম বর্ষণে নোয়াখালী জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলে রোপা আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় হাতিয়া উপজেলায় সী-ট্রাকসহ সকল নৌ-যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ফেনীর সড়কসহ শহরের অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার জন্য রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে শহরবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে ও তার আশেপাশের উপকূলে সৃষ্ট নিম্নচাপটি এখনো একই জায়গায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আগামী দুই থেকে তিন দিন সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।