চীনের সঙ্গে বিতর্কিত বন্দী প্রত্যর্পণ বিল এখন ‘মৃত’ বলে মন্তব্য করেছেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই বিল নিয়ে সরকারের সব প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
কিন্তু এরপরও বিলটি সম্পূর্ণ বাতিল করার ঘোষণা দিলেন না ল্যাম। যদিও এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা এটি বাতিল করারই দাবি জানিয়ে আসছে।
টানা কয়েক সপ্তাহের আন্দোলনের মুখে গত ১৫ জুন চীনের সঙ্গে বিতর্কিত বন্দী প্রত্যর্পণ বিল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল হংকং সরকার।
ওই সময় ল্যাম জানান, বিলটি সমাজে ব্যাপক বিভক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য ‘থেমে একবার ভাবার’ জন্য সরকারের প্রতি বিভিন্ন মহল যে আহ্বান জানাচ্ছিল সেটা শুনেই বিলটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কিন্তু এবার বিলটি নিয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলেও তা তুলে নেয়ার ঘোষণা তো দূরের কথা, কোনোরকম ইঙ্গিতও দিলেন না হংকং নেতা।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ল্যাম বলেন, ‘সরকার আবার আইন পরিষদে বন্দী প্রত্যর্পণ বিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে, এমন একটি কথা শোনা যাচ্ছে। যার মধ্য দিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলতার প্রতি এক ধরনের সন্দেহ ঝুলে থাকতে দেখা যাচ্ছে জনগণের মধ্যে। তাই আমি আবারও বলছি, এমন কোনো পরিকল্পনাই নেই। বিলটি মৃত।’
ক্যারি ল্যাম এখন মুখে ‘বিলটি মৃত’ বা শেষ বলে উল্লেখ করলেও এর আগে তিনি বলেছিলেন, ২০২০ সালে বর্তমান আইনি প্রক্রিয়ার মেয়াদ শেষ হলে এই বিলের প্রক্রিয়া এমনিই শেষ হয়ে যাবে।
ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিল তুলে না নেয়ায় এখন যত যা-ই বলা হোক, ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বিষয়টি ঝুলেই থাকছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
হংকংয়ের পার্লামেন্টে চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত ল্যাম ও তার দলীয় আইনপ্রণেতারা বন্দী প্রত্যর্পণ আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রস্তাবিত বিলটিতে পলাতক অপরাধীদের বিচারের জন্য চীনে প্রত্যাবাসনের বিধান রাখা হয়েছিল।
সরকারের দাবি ছিল, প্রস্তাবিত বিলটি বর্তমান আইন ও বিচার ব্যবস্থায় থাকা ‘ফাঁকফোকর’গুলো বন্ধ করে দেবে। ফলে হংকং অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হবে না।
প্রস্তাবিত এই বিল নিয়ে আলোচনা শুরুর পর থেকেই শহরের অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থলটি অচল হয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সালের মধ্যে অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে চীন প্রশাসন। ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে ফেরত দিয়েছিল ব্রিটেন৷