চট্টগ্রাম বন্দরের নানা সমস্যা তুলে ধরে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএর) সভাপতি মো. সিদ্দীকুর রহমান বলেছেন, বন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ ও খালাস করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের অর্ডার অন্যদেশ চলে যাচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমলারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন হচ্ছে না। আর অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন না হওয়ায় রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই অযোগ্য আমলাদের সরিয়ে দিয়ে যোগ্যব্যক্তিদের দায়িত্ব দিতে হবে। এই জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
সোমবার বিজিএমইএ’র সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরে পোশাক শিল্পের আমদানি করা মালামাল খালাস ও রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের জটিলতা এবং পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বন্দরে পণ্য খালাস করতে না পারায় কন্টেইনার ভাড়া বাবদ বন্দর ও জাহাজ কোম্পানিকে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হচ্ছে উল্লেখ করে সিদ্দীকুর রহমান বলেন, দিন দিন পোশাক বিক্রেতাদের লোকসান হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পন্য খালাস করতে ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে পণ্য পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়িদের জেল খাটতে হবে। অথচ সরকারি চাকরি করে আরামে দিন কাটান আমলারা। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না।
চট্টগ্রাম বন্দরের সমস্যা তুলে ধরে সিদ্দীকুর বলেন, বন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের অর্ডার অন্যদেশ চলে যাচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। পোশাক শিল্প নিয়ে বিদেশে নেতিবাচক খবর প্রচারের কারণে এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য সরবরাহের ক্রেন সংকটের বিস্তারিত তুলে ধরে সিদ্দীকুর রহমান বলেন, বন্দরে কি-গ্যান্ট্রি ক্রেন প্রয়োজন ২৬টি, আছে চারটি, এরমধ্যে দুইটিই বন্ধ। রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন প্রয়োজন ৫২টি, আছে ২৩টি। এম্পটি হ্যান্ডলার ৩৯টি প্রয়োজন, আছে ১৯টি, ট্রাক্টর ট্রেইলর ১৩০টি প্রয়োজন, আছে ৪৩টি। এই সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
বর্তমানে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধিতে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যা মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জটিলতায় আমরা সময়মত অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারছি না। ফলে অন্য দেশগুলো আমাদের অর্ডারগুলো নিয়ে যাচ্ছে।’