রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামি সাফাত আহমেদের মোবাইল ফোন থেকে মামলার অন্যতম আলামত ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে পুলিশ।
জব্দকৃত ৪৮ মিনিটের ওই ভিডিও যাচাই-বাছাই করে পুলিশ অনেক আলামত সংগ্রহ করছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালের মোবাইল ফোন থেকে দুই শিক্ষার্থীর ধর্ষণের ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়েছিল সাফাত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিল্লালকে হোটেলে কক্ষের বাথরুমের ফলস পার্টিশনের কাছে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এসময় চালক বিল্লাল ধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও করে।
‘একপর্যায়ে পাশের রুম থেকে ওই দুই তরুণীর বন্ধু চিকিৎসককে ডেকে এনে গর্ভনিরোধক পিল সেবন করাতে বলে। চিকিৎসক পিল খেতে দুই তরুণীকে অনুরোধ না করায় তাকে মারধর করা হয়। এসময় ওই চিৎিসকের সামনে ইয়াবা রেখে ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। এ বিষয়ে মুখ খুললে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।’
আরেক আসামি নাঈম আশরাফের রিমান্ড চলছে জানিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, নাঈমের রিমান্ড চলছে, তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে ঘটনা সম্পর্কে আমরা পুরোপুরিই পরিস্কার হয়েছি। তদন্তের পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নাঈম আশরাফের বান্ধবীর সংখ্যা কত এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দুই শতাধিক বান্ধবীর কথা উল্লেখ করেছেন।
সিনে জগতের নামি-দামি মডেলের সঙ্গে কিভাবে পরিচয় গোয়েন্দাদের এমন প্রশ্নে নাঈম জানায় ইভেন্ট করতে গিয়েই তাদের সঙ্গে পরিচয় হয়।
সূত্র আরো জানায় নানা প্রশ্নের মাঝে সিনে জগতের অনেক নামি-দামি মডেল সম্পর্কে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন নাঈম। এমনকি সাফাতকে সরবরাহ করা অনেক মডেলের নামও বলেছেন। অনেক মডেলকে সাফাতের শয্যা সঙ্গী করার কথাও স্বীকার করেন নাঈম।
গত ১১ মে সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দিন আদালতে তোলা হলে আদালত সাফাতকে ৬ দিন এবং সাদমান সাকিফকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়া গত ১৫ মে সাফাতের দেহরক্ষী রহমতকে গুলশান থেকে এবং ড্রাইভার বিল্লালকে নবাবপুর থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে রহমতকে ৩ দিন এবং বিল্লালকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গত ২৮ মার্চ বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে বন্ধুর মাধ্যমে এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী। এরপর অভিযুক্তরা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে।