১৯৭০ সালে সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম ভালুকা এবং গফরগাঁও দুইটি আসনে বিপুল ভোটে মেম্বার অফ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলী (এম এন এ) নির্বাচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর সামসুল হুদা। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর তাকেও আর পাওয়া যায়নি রাজনীতিতে। হঠাৎ পাওয়া গেল সেই বীরমুক্তিযোদ্ধার খবর।
প্রায় মৃত্যুশয্যায় তিনি। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল এর ২১২ নং কেবিন ব্লকে গেল একমাস যাবৎ ভর্তি আছেন তিনি। সমগ্র দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতা কামনা করে প্রফেসর সামসুল হুদা ও তার পরিবার এর পক্ষ থেকে দোয়া চেয়েছেন।
তিনি ১৯৩৩ সালে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার পাইথল ইউনিয়নের শহিদনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের ৮৫ বছর বয়সে তিনি ইসলামিক চিন্তাবিদ, আধ্যাত্মিক জ্ঞান তাপস্য ও মুর্শিদ কেবলা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
ষাটের দশকে আনন্দ মোহন কলেজের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ছিলেন মুজিব নগর সরকারের উপ-রাষ্ট্রপ্রতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের প্রিয় ছাত্র। তাঁর হাত ধরেই তিনি রাজনীতিতে আসেন।
তারপর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের ডাকে ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও এবং ভালুকা দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে যান।
সেই নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন একাধিকবার নির্বাচিত প্রার্থী মওলানা সামছুল হুদা পাঁচবাগী। সেই নির্বাচনে তাকেও বিপুল ভোটে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধু`কে অবাক করে দিয়ে বিজয়ের গৌরব অর্জন করেছিলেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিজের আসনের বাইরেও তার প্রিয় শিক্ষক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নির্বাচনীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী নেজামে ইসলামের প্রধান মওলানা আযাহারুল ইসলাম যখন আওয়ামীলীগকে ইসলাম বিরোধী প্রপাগান্ডায় জড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়েছিল তখন তিনিই প্রতিপক্ষকে কোরআন ও হাদিসের আলোকে প্রতিহত করেছিলেন।
তাকে ন্যায় ও সততার জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধু তাকে ‘আমার মওলানা সাহেব’ বলে ডাকতেন। আজ সেই সৎ নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক ব্যক্তির জন্য সুস্থতা কামনা করে সকলের দোয়া প্রার্থনা করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর সামসুল হুদার স্বজনেরা।