চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বঙ্গবন্ধু কি দেখছেন বাংলার মানুষ এখনও তাঁকে কতটা ভালবাসে?

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উড়ছে মহাকাশে। ১২ মে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নির্দিষ্ট কক্ষপথে মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে হাজারো বাঙালির উপস্থিতিতে এবং অনলাইনে লাখ লাখ মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৩ হাজার ৭০০ কেজি ওজনের স্যাটেলাইট রকেট ফ্যালকন ৯ বহন করে আকাশের দিকে ছুটে চলে ক্ষিপ্রগতিতে। কক্ষপথে পৌঁছে দিয়ে ফ্যালকন ৯ রকেটটি ফিরে আসে যথা সময়ে। ঐতিহাসিক মুহূর্তে- রাত ২টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে উপস্থিত বাঙালি সমবেত কন্ঠে গেয়ে উঠেন আমাদের জাতীয় সংগীত-“আমার সোনার বাংলার আমি তোমায় ভালবাসি…।”

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমাদের মহান স্বাধীনতাকে উজ্জীবিত করে মহাকাশে ভাসছে। মহাকাশে ভাসছে আমাদের লাল-সবুজের বিজয় পতাকা। যে পতাকা আমরা অর্জন করেছি অনেক ত্যাগের বিনিময়ে। কথায় আছে-“স্বাধীনতা অর্জন করার চাইতে রক্ষা করা আরো কঠিন।”

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। যে স্বাধীনতায় ঝরেছে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রাণের রক্ত; বিলীন হয়েছে দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম। তাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে, স্বাধীনতা উপভোগ করছি। সতেরো (প্রায়) কোটি বাঙালির কৃতজ্ঞ থাকা দরকার তাঁদের প্রতি। কৃতজ্ঞ থাকা দরকার যিঁনি বা যাঁরা দেশটাকে বিশ্ববাসীর চোখে মর্যাদায় উন্নীত করছেন। তাঁরা আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর কেবল সুবিধাগুলো গ্রহণ করছি আমরা সর্বস্তরের জনগণ।

২০১৮-তে জাতীয় পর্যায়ে আমাদের সফলতা এসেছে অভাবনীয়ভাবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আকাশে উৎক্ষেপণ অন্যতম কার্যক্রম। স্যাটেলাইটটির নির্মাতা ফ্রান্সের অ্যালেনিয়া ৩ বছর পর্যবেক্ষণ করার পর কার্যক্রমটি বাংলাদেশের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

মহাকাশে স্যাটেলাইটটির অবস্থান ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায়। এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুইটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। জয়দেবপুর গ্রাউন্ড স্টেশনটি স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আর বিকল্প হিসেবে থাকবে রাঙামাটি বেতবুনিয়া (বঙ্গবন্ধুর সময় স্থাপিত ভূ-উপগ্রহ বেতবুনিয়া) গ্রাউন্ড স্টেশন। জয়দেবপুর স্টেশনটিতে ১০ টন ওজনের দুটি অ্যানটেনা স্থাপন করা হয়েছে। দেশের আঠারো জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ তরুণ (ছেলেমেয়ে) এখানে কাজ করবেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিশ্বে ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক বাংলাদেশ।

এ স্যাটেলাইটের সক্ষমতাকে ব্যবহার করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। সাশ্রয় হবে দেশের অর্থ। দেশের ৩০টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল নিজস্ব স্যাটেলাইটে চলবে কম খরচে। টেলিভিশন সম্প্রচারে ছবি থাকবে স্বচ্ছ ও ঝকঝকে। পাহাড়ি দুর্গম এলাকায়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত হবে। ডাক ও টেলি যোগাযোগে আসবে অধিক দ্রুত গতি। ভূমিকম্পসহ দেশের অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সহায়ক হবে এই স্যাটেলাইট।

বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। তাই দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে দেশের সকল নাগরিককে। বজায় রাখতে হবে সর্বস্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা। জীবন চালনার প্রয়োজনে সরকারের নিকট থাকে আমাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া। এই দাবি-দাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে রুখে না দাঁড়িয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে না পড়ে, যথার্থ দাবিটি উত্থাপন করা দরকার। যাতে সমঝোতার মাধ্যমে সরকারের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়। তবে দেশ হবে শান্তিপূর্ণ এবং শান্তিময়।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)