চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বইমেলায় ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বই নিষিদ্ধ, থাকবে সমন্বিত নিরাপত্তা

অমর একুশে বইমেলাকে ঘিরে প্রতিবারের মতো এবারো নিশ্ছিদ্র-সুদৃঢ় ও সমন্বিত নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বই নিষিদ্ধ থাকবে মেলাতে, এসব বইয়ের নজরদারিতে পুলিশের গোয়েন্দারা কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, বইমেলাকে ঘিরে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বইমেলার ভেতরে ও বাহিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোষাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ ডিউটিতে থাকবে। সিসিটিভি দিয়ে মেলার ভেতরে ও চারপাশে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে মেলা প্রাঙ্গণে ও বাইরে ওয়াচটাওয়ার দিয়ে সর্বদা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার  রাজধানীর বাংলা একাডেমী ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আগামীকাল থেকে মাসব্যপী অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারো নিশ্ছিদ্র ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে যা যা করনীয় সকলের সমন্বয়ে তা করা হবে। নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে মেলায় আগত দর্শনার্থী, লেখক ও প্রকাশকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

টিএসসি থেকে দোয়েল চত্ত্বর পর্যন্ত প্রতিটা ইঞ্চি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে এবং মেলায় স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হবে।

বাংলা একাডেমীতে ২টি প্রবেশপথ ও একটি বাহিরপথ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩টি প্রবেশপথ ও ৩টি বাহিরপথ থাকবে। প্রতিটি প্রবেশপথেই আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করে সবাইকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এছাড়া, হাতেও তল্লাশি করা হবে, এজন্য প্রবেশপথে একটু বিলম্ব হলেও সবাইকে ধৈর্য্য সহকারে পুলিশকে সহযোগিতার আহ্বান জনান তিনি।

ইভটিজিংসহ যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ থাকবে। মেলার বাইরের দিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে পুলিশের একটি আউটার কর্ডন থাকবে যেন কোন অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি এসে নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে।

টিএসসি দিয়ে যারা প্রবেশ করবেন তারা মলচত্ত্বরে এবং দোয়েল চত্ত্বর দিয়ে যারা প্রবেশ করবেন তারা রাস্তার দুই পাশে এবং ঢাবির জিমনেসিয়ামে গাড়ি পার্ক করবেন। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্ত্বর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধসহ পুরো এলাকায় কোন ভাসমান দোকান ও হকার থাকবে না। ছিনতাই-পকেটমার রোধে পুলিশের ফুট পেট্রোল ও মোবাইল পেট্রোল টিম কাজ করবে। যে কোন তথ্য সংগ্রহে সাদা পোষাকে পর্যাপ্ত গোয়েন্দা পুলিশ তৎপর থাকবে।

ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক যে কোন বই বিপনন নিষিদ্ধ উল্লেক করে তিনি বলেন, এসব নজরদারীতে বাংলা একাডেমীর সার্ভিলেন্স টিম ও পুলিশের গোয়েন্দারা থাকবে। কোন স্টলে এমন বই পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত থাকবে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকায় নজরদারী থাকবে। কন্ট্রোলরুমে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন থাকবে, কেউ সহায়তা চাইলে তাৎক্ষনিক সহায়তা দিতে পুলিশ অফিসাররা প্রস্তুত রয়েছেন। ব্লগার-লেখকরা নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে সহায়তা চাইলে তাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।

বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য ঢাবি এলাকার এন্ট্রি পয়েন্টগুলোতে বাড়তি ট্রাফিক মোতায়েন থাকবে।

কোন ধরনের জঙ্গি তৎপরতার কোন হুমকি নেই জানিয়ে কমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দ্রুততম সময়ে জঙ্গির নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়েছি। নতুনকরে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালাতে তাদের শক্তি নেই, তবে বিচ্ছিন্ন যে কোন ঘটনা এড়াতে আমাদের গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে।