এক বছর আগে এ দিনেই মেলা এলাকায় নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন প্রথাবিরোধী মুক্তমনা প্রয়াত বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়। একবছর কেটে যাওয়া এ লেখককে নিয়ে আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিলো না কোনো আয়োজন।
এমন একটি লেখকের স্মরণে মেলায় কোনো আয়োজন থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাঠক-প্রকাশকরা। মেলা কমিটি বলেছে, আগামীতে এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন তারা।
তবে পাঠকরা বলছেন, এমন একটি লেখকের হত্যা করার পর তার স্মৃতির জন্য কিছু করা উচিত ছিলো। আমরা আশা করেছিলাম যে বইমেলায় আজ ঢুকলেই অভিজিৎ রায়ের ছবির পোস্টার দেখতে পাবো। এবং তার কিছু উক্তি বড় করে লেখা থাকবে বইমেলা প্রাঙ্গনে। অথবা তাকে নিয়ে স্মৃতি ফলক থাকবে। তবে বইমেলায় এসে কিছুই পেলাম না।
লেখক অভিজিৎ রায়ের পর একইভাবে হত্যার শিকার হন জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরফিন দীপন। অবশ্য তার স্মরণে জাগৃতি প্রকাশনীর পুরো পুরো স্টলটি সাজানো হয়েছে দীপনকে ঘিরে।
ফয়সাল আরেফীন দীপনের স্ত্রী ডাক্তার রাজিয়া রহমান বলেন, অনেক কষ্ট হয়েছে এবার দাঁড়াতে। তারপরও আমার মনে হয়েছে এবছর জাগৃতি প্রকাশনী নিয়ে না দাঁড়াতাম তাহলে বইমেলায় দীপনের কোনে চিহৃও থাকতো না। আমার স্টলটি পুরোটাই দীপনের কিন্তু বইমেলায় আর কোনো জায়গায় ওর ছাপ পাইনি।
দীপন যেই মুহুর্তে কাজ করতে যেয়ে হত্যার শিকার হয়েছে ঠিক তখনকার সেই পান্ডুলিপির উপর কাজ করছিলো, যেই কলম দানিটা ওর টেবিলে ছিলো, এরকম বিভিন্ন স্মৃতি স্টলে রেখেছি। কারণ সাধারণ জনগণ দীপনকে সেভাবে চিনেন না তাদের জন্য ১৬০০’শ মতো বইয়ের প্রকাশকে দেখে যেনো কিছুটা হলেও উপলদ্ধি করতে পারে।
মেলা কমিটি এবারের মেলায় প্রয়াত লেখক অভিজিৎ রায় আর ফয়সাল আরেফিন দীপনের স্মরণে বিশেষ কোন আয়োজন না রাখায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরা।
শ্রাবণ প্রকাশনী প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, বাংলা একাডেমি চাইলেই লেখক অভিজিৎ রায়ের জন্য একটি আলাদা কর্ণার করতে পারতো। বা একটি রাস্তার নাম করতে পারতো। তারা কোনো কিছুই করেনি। এমন একজন লেখক ও প্রকাশক বইমেলা থেকে হারিয়ে গেলেন তাদের আমরা স্বরণ করলাম না এ ঘটনা কিন্তু এবার প্রথম ঘটেছে।
অবশ্য বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা বলছেন, এবার বইমেলায় ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও শহীদের নামে বইমেলার চত্ত্বরের নাম দেওয়া হয়েছে। অভিজিৎ ও দীপনের নাম এবছর হয়নি হয়তো আগামী বছর হবে এটি আসলে সামগ্রিক পরিকল্পনার মধ্যে হয়ে থাকে।
এছাড়া শুক্রবার সাড়ে দশটা থেকে মেলার দ্বার উন্মুক্ত হবার পর শেষ শিশুপ্রহরে শিশুদের ভীড় ছিলো মেলাপ্রাঙ্গনে। ছুটির দিন শনিবারে মেলা খুলবে সকাল সাড়ে দশটায়।