ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাক্রোঁ দেশটির সরকারে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। ঐতিহাসিক ভার্সাই প্রাসাদে দেয়া এক বক্তব্যে আইনপ্রণেতাদের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি। এতে আরও দক্ষ সরকার গড়া সম্ভব এবং ফ্রান্সকে তা ‘বৈপ্লবিকভাবে নতুন পথে’ নিয়ে যাবে বলেও অভিমত তার।
মাক্রোঁর এই প্রস্তাব অনুযায়ী সংসদ সদস্যের সংখ্যা ৫৭৭ থেকে কমিয়ে ৩৮৫ জনে এবং সিনেট সদস্য ৩৪৮ থেকে ২৩২ জনে নিয়ে আসা হবে।
৯০ মিনিটের দীর্ঘ বক্তৃতায় ফ্রান্সে “সামষ্টিক মর্যাদা” ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করে মাক্রোঁ বলেন, এই পরিবর্তনের প্রস্তাব এক বছরের মধ্যে সংসদে পাশ করাতে না পারলে গণভোটের আয়োজন করা হবে। ফ্রান্স ভুল পথে ছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্রান্সের অদূরে চতুর্দশ লুই নির্মিত ১৭ শতকের ভার্সাই প্রাসাদে মাক্রোঁর এই সভা আয়োজন সমালোচনার শিকার হয়েছে। ডানপন্থী পত্রিকা লিবারেশন মাক্রোঁর এই সভা আয়োজনকে “কতৃত্ববাদী আচরণের” সর্বশেষ প্রকাশ বলেও অভিহিত করে। ভার্সাই প্রাসাদে প্রতিনিধি দলের আলোচনা সভা আয়োজন বিরল হলেও নিকোলাস সার্কোজি প্রথম এর সূচনা করেছিলেন।
ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) সমালোচনা করে মাক্রোঁ বলেন, আমলাতান্ত্রিকতার ক্রমবৃদ্ধির জন্য গত ১০ বছরে ইইউ “পথ হারিয়েছে”। “নতুন প্রজন্মের নেতারা” এর সমাধান দিতে পারতো বলেও অভিমত তার। সরকারি পর্যায়ে অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের কথাও বলেন তিনি। এছাড়াও তিনি জানান, সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ফ্রান্সে যে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে তা আগামী শরতের মধ্যেই তুলে নেয়া হতে পারে।
ফ্রান্সের সাবেক অর্থমন্ত্রী মাক্রোঁ ২০১৬ সালের এপ্রিলে তার দল লা রিপাবলিকে এন মার্চে (এলআরইএম) প্রতিষ্ঠা করেন। গত ৭ মের দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পান মাক্রোঁ। এক মাস পরের সংসদ নির্বাচনেও ৫৭৭ আসনের মধ্যে তার দল এবং জোট ৩৫০টি আসন লাভ করে।
এই বিশাল জয়কে দেশটির সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের জন্য জনগণের ম্যান্ডেট বলেই অভিহিত করেন তিনি।