ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তিন সপ্তাহব্যাপী চলমান বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ।
শনিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। এসময় বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে কয়েক হাজার ইয়েলো জ্যাকেট পড়ে বিক্ষোভকারীরা প্যারিসের রাস্তায় নেমে আসে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ এই সপ্তাহের শুরুতে জ্বালানির কর প্রত্যাহার করা হবে না বলে ঘোষণা দেয়ার পর আবারো বিক্ষোভে ফেটে পরেন বিক্ষোভকারীরা।
তবে বিক্ষোভকারীরা প্যারিসের বিখ্যাত বিপণিবিতানের দিকে তারা এগোতে থাকলে পুলিশ তাদের বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছোড়েন।
চ্যাম্পস এলিসি অ্যাভিনিউয়ের কাছে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা যেন এসব এলাকায় পৌঁছতে না পারে, সেজন্য রাস্তায় ধাতুর ব্যারিকেড বসিয়ে অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ।
বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের পদত্যাগ দাবি করে শ্লোগান দেন। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত স্পর্শকাতর কোনো এলাকায় বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করতে পারেননি।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতা ম্যারি ল পেনের প্রভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
ফ্রান্সে যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে মূলত ডিজেলই ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশি। গত ১২ মাসে এই ডিজেলের দাম দেশটিতে ২৩ শতাংশের মতো বেড়েছে, অর্থাৎ প্রতি লিটারে গড়ে ১.৫১ ইউরো। ২০০০ সালের পর এটাই ডিজেলের সর্বোচ্চ মূল্য বৃদ্ধি।
বিশ্বজুড়েই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে এবং আবার কিছুটা করে কমছে। কিন্তু মাক্রোঁ সরকার তার পরিচ্ছন্ন গাড়ি ও জ্বালানি কর্মসূচির অধীনে চলতি বছরে প্রতি লিটার ডিজেলে ৭.৬ সেন্ট এবং প্রতি লিটার পেট্রোলে ৩.৯ সেন্ট হাইড্রোকার্বন ট্যাক্স আরোপ করায় দেশটিতে জ্বালানির দাম বাড়ার পর আর কমছে না।
তার ওপর আগামী ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি লিটার ডিজেলে আরও ৬.৫ সেন্ট ও পেট্রোলে ২.৯ সেন্ট মূল্য বৃদ্ধির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্টের ওপর ক্ষুব্ধ জনগণ। তারই ফল হিসেবে এই আন্দোলন।