মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় পটুয়াখালীর রাজাকার ফোরকান মল্লিকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম।
২৯৭ প্যারা সম্বলিত ৯৯ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান। ১১ মিনিট ধরে রায় পাঠ করার সময় ফোরকান মল্লিককে চিন্তাযুক্ত দেখাচ্ছিলো।
রায় ঘোষণার দিন ট্রাইব্যুনালের ভেতরে বাইরে ছিল স্বাভাবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসামীকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। আগে সব রায় ঘোষণা ট্রাইব্যুনাল ১-এর এজলাসে হলেও এবার আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ অন্যদের উপস্থিতি কম থাকায় ট্রাইব্যুনাল-২ নিজেদের এজলাসেই বসেন।
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ৯৯ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ওই সময়ে ট্রাইব্যুনালের নির্ধারিত স্থানে রাখা কাঠের চেয়ারে বসে ছিলেন আসামী ফোরকান মল্লিক। রায়ে আসামী সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ দেন ট্রাইব্যুনাল।
ফোরকানের বিরুদ্ধে আনা ৩, ৪ ও ৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ৩ ও ৫ নম্বর অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ৪ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে।
এর মধ্যে মির্জাগঞ্জ থানার সুবিদখালীতে চারজনকে গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরকরণ (৩ নম্বর অভিযোগ) এবং দক্ষিণ কলাগাছিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন মৃধাকে আটকের পর নির্যাতন ও বাড়ি-ঘর লুটপাটের (৫ নম্বর অভিযোগ) ফোরকান পেয়েছেন ফাঁসির আদেশ।
অন্যদিকে কাকড়াবুনিয়া বাজারে চারজনকে গণহত্যা, হত্যা, জখম, আটক, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের দায়ে পেয়েছেন আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ।
প্রত্যাশিত রায় পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায় আসামীপক্ষ।
পটুয়াখালির রাজাকার ফোরকান মল্লিক আটক থাকায় আইন অনুযায়ী রায় ঘোষণার দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আপিল করতে হবে।